বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ হাওলাদারের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রী লোপা আক্তারকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। গত বুধবার নিহতের মা জেসমিন বেগম রিয়াজ হাওলাদার ও তার বড় ভাই রফিকুল আলম হাওলাদারের বিরুদ্ধে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।
ট্রাইব্যুনালের স্টেনোগ্রাফার সাইফুল ইসলাম চৌধুরী জানান, জেসমিন আক্তারের অভিযোগসহ আদালতের নির্দেশ থানায় প্রেরণের জন্য বুধবারই সংশ্লিষ্ট থানার জিআরওকে দেওয়া হয়েছে।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, তিনি আদালতের আদেশ কপি পাননি। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি শুনেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, রিয়াজ হাওলাদার লোপা আক্তার (১৭) নামক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে হার্টঅ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করে তরিঘড়ি দাফনের ব্যবস্থা করেছে। গত ২১ জুন মধ্যরাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। রিয়াজ ও লোপা দাড়িয়ালের কলেঙ্গা গ্রামে একই বাড়ির বাসিন্দা ও আত্মীয়।
জেসমিন বেগম জানান, তার স্বামী নাসির হাওলাদার মালয়েশিয়া প্রবাসী। মেয়ে লোপা ও ছেলে মেহেদি হাওলাদারকে নিয়ে তিনি বাড়িতে থাকেন। লোপা স্থানীয় হযরত আলী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। অভিযুক্ত রিয়াজ জেসমিনের চাচাতো ভাসুরের ছেলে।
জেসমিন জানান, ঘটনার কিছুদিন আগে লোপা তাকে জানিয়েছিল রিয়াজ তাকে উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিচ্ছে। গত ২২ জুন ফজরের নামাজের জন্য ডাকতে মেয়ের কক্ষে গিয়ে দেখেন লোপার নিথর দেহ হাঁটু গেড়ে মাটির উপর এবং গলার সঙ্গে পেঁচানো ওড়না জানালার সঙ্গে বাঁধা। মেয়ের এ অবস্থা দেখে চিৎকার করলে রিয়াজ ও তার ভাই ছুটে আসেন। হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছে জানিয়ে সকালে দ্রুত দাফনের ব্যবস্থা করে।
জেসমিন মামলায় উল্লেখ করেন, মেয়ের ঘটনায় তিনি জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছিলেন। পরে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলোচনার পর বুঝতে পারেন তার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে রিয়াজ। মামলা দিতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরমর্শ দেয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রিয়াজের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি। তার ভাই রফিকুলের ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। জেসমিন জানান, মামলার পর তারা আত্মগোপনে রয়েছে।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, এ বিষয়ে আমি অবগত না, আদালতের মামলার কোনো নথি এখনো আমি পাইনি।