রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজি হককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। শনিবার রাত ৮টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাকে ডিবিতে খুব সম্মানের সঙ্গে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি ভেরি হ্যাপি। আমি ভেরি হ্যাপি উইথ দ্য গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ।’
তমিজির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিসহ সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা রয়েছে। একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাঁকে সাইবার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, তমিজি হকের নামে দক্ষিণখান থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা আছে।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, তাঁর সঙ্গে তো কারও কোনো শত্রুতা নেই। হঠাৎ করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসে বলা শুরু করলেন, তাঁর মা হাফ ইসরায়েল। ইসরায়েল সরকারকে তিনি আহ্বান করলেন তাঁকে উদ্ধারের জন্য। বাংলাদেশ সরকার যদি গ্রেপ্তারই করত, তাহলে তো তিনি যখন বিমানবন্দর দিয়ে এলেন তখনই গ্রেপ্তার করা হতো। আবার তিনি তাঁর বাংলাদেশি পাসপোর্ট আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখাচ্ছেন। এটি দেশের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। পাসপোর্ট পুড়িয়ে কেন তিনি আনন্দ-উল্লাস করেছেন, সেসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
হারুন বলেন, তমিজি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে থাকলে চিকিৎসার জন্য রিহ্যাবে পাঠানো হবে। সুস্থ করে এনে তাঁকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তিনি যা করেছেন, তা সুস্থ মস্তিষ্কে করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তমিজি কখনও দেশে, কখনও থাকেন বিদেশে। তবে ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফেরার পর গুলশানের বাড়িতে বাস করছেন তিনি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে ফের আলোচনায় আসেন তিনি। গত ১৮ সেপ্টেম্বর মক্কা থেকে ফেসবুক লাইভে এসে আওয়ামী লীগের তীব্র সমালোচনা করেন তমিজি হক। তিনি ফেসবুক লাইভে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে গাজীপুরে তাঁর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ করেন।
তখন তমিজি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন নেতা ছিলাম আমি। আওয়ামী লীগ আমার ১ হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়েছে। আমাকে দেশ ছাড়া করেছে। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানোর চেষ্টা করছে।’ পরে তাঁকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।