সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে সরকারের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩২ পৃষ্ঠার এ রায়টি প্রকাশিত হয়। ছয় বিচারপতির দেওয়া এ রায়টি লিখেছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
প্রসঙ্গগত, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়।
চারদলীয় জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে অনুত্তীর্ণ ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধেও তারা আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে।
পরে ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়। ওই সব আপিলের শুনানি শেষে একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর রায় দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
রায়ে ওই ৮৫ নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুর্নবহাল করতে প্রায় এক যুগ আগে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। ফলে ওই সব কর্মকর্তা আর চাকরি ফেরত পাবেন না।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অবন্তী নুরুল।
অন্যদিকে চাকরিচ্যুত নির্বাচন কর্মকর্তাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, প্রবীর নিয়োগী, সালাহ উদ্দিন দোলন ও কামরুল হক সিদ্দিকী, ওবায়দুর রহমান মোস্তফা, অনীতা গাজী রহমান ও শুভ্র চৌধুরী।