স্বর্ণপদক জয়ী বরিশাল নগরীর আবৃত্তিশিল্পী শামসুন্নাহার নিপাকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় তার প্রেমিক আমিরুল ইসলামকে (২৯) পুলিশ নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করেছে। মামলা দায়েরের ১৩ দিন পর গ্রেফতার করা হলো তাকে।
গতকাল শনিবার দুপুরে আমিরুল ইসলামকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতারকৃত আমিরুল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার পূর্বহাটি গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে। তিনি নরসিংদীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
নিজের ফেসবুক আইডিতে ‘চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়’ পোস্ট দিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন নিপা।
কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, গত ৩ আগস্ট নগরীর উত্তর মল্লিক রোডের জাহান ম্যানশনের বাসা থেকে নিপার লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৩ আগস্ট নিপার বোন ডালিয়া আক্তার বাদী হয়ে একমাত্র আমিরকে আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল নিপা ও আমিরের। আত্মহত্যার আগে নিপা বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাতে অস্বীকৃতি জানায় এবং আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে বলে অভিযোগ আনা হয়।
পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন জানান, পরবর্তীতে আমিরের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে শুক্রবার নরসিংদীতে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালানো হয়। এখান থেকে গ্রেফতার করা হয় আমিরকে। আজ দুপুরে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নিপা মৃত ফজলুল করিমের মেয়ে। মাও নেই তার। নিপা তার বোন ডালিয়ার সাথে বসবাস করতেন। নগরীর একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেছিলেন। এছাড়া তিনি উদীচী ও বরিশাল নাটক’র সদস্য ছিলেন। উদীচীতে নিয়মিত আবৃত্তি করতেন নিপা। কবিতা আবৃতি করে মাগুরার জিয়াউল হক স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন।
প্রতিদিনের মতো ২ আগস্ট রাতে পরিবারের সকলে খাবার খয়ে যে যার রুমে চলে যান। পরদিন ৩ আগস্ট সকালে ঘুম থেকে জেগে নিপাকে তুলতে গিয়ে দরজা বারবার আঘাত করেন বোন ডালিয়া। কিন্তু সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখতে পান ঘরের আড়ার সাথে নিপার লাশ ঝুলছে। এরপর থানায় খবর দেয়া হয়। সেখান পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার ১০ দিন পর ডালিয়া মামলা দায়ের করেন।