আপন জুয়েলার্সের দিলদার-আজাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

রাজধানীর গুলশান থানায় মুদ্রা পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুই মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম ও তার ভাই আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম নুর নাহার ইয়াসমিন রোববার তাদের বিরুদ্ধে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালতের শুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ফরিদ মিয়া সোমবার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে ১২ আগস্ট চোরাচালানের মাধ্যমে আনা প্রায় ১৫ মণ স্বর্ণ ও হীরা জব্দের ঘটনায় এবং এ সব মূল্যবান ধাতু কর নথিতে অপ্রদর্শিত ও গোপন রাখার দায়ে আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে পাঁচটি মামলা দায়ের করে শুল্ক গোয়েন্দা। এর মধ্যে গুলশান থানায় দুটি (মামলা নং- ১৫ ও ১৬), ধানমন্ডি থানায় একটি (মামলা নং- ১০), রমনা থানায় একটি (মামলা নং- ২৭) এবং উত্তরা থানায় একটি (মামলা নং- ১৭) ফৌজদারি মামলা করা হয়।

শুল্ক গোয়েন্দার পাঁচ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা যথাক্রমে এম আর জামান বাঁধন, বিজয় কুমার রায়, মো. শাহরিয়ার মাহমুদ, মোহাম্মদ জাকির হোসেন এবং মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ সব মামলা করেন। মামলার অভিযুক্তরা হলেন, আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষের তিনজন যথাক্রমে দিলদার আহমেদ সেলিম, গুলজার আহমেদ এবং আজাদ আহমেদ।

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ধারা ২ (ঠ) এবং কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর ধারা ১৫৬(৫) অনুযায়ী শুল্ক গোয়েন্দা এ মামলাগুলো তদন্ত করবে।আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণালঙ্কার মজুদের অভিযোগে কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ অনুযায়ী কাস্টম হাউস ঢাকায় আরও পাঁচটি কাস্টমস মামলা বিচারাধীন।

এছাড়া স্বর্ণালঙ্কার মজুদ, মেরামত, তৈরি, বিক্রয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত ভ্যাট ফাঁকি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটগুলো কাজ করছে। আয়কর নথিতে অপ্রদর্শিত স্বর্ণ দেখানোর কারণে সংশ্লিষ্ট আয়কর জোনের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

তাছাড়া চোরাচালান, শুল্ক ফাঁকি, মানি লন্ডারিং, ভ্যাট ফাঁকি, আয়কর ফাঁকি ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জনজনিত দুর্নীতি হওয়ায় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে এনবিআরের দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) পাঠানো হয়েছে।

আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা স্বর্ণের অর্থ অবৈধভাবে ব্যবহার করেছেন। একইসঙ্গে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের সঠিক পরিমাণ আয়কর নথিতে প্রদর্শন না করে এর উৎস গোপন করেছেন।

এসব কার্যকলাপ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ধারা- ২ এর (ফ)(ই) এবং ২(শ)(১৮) অনুযায়ী মানি লন্ডারিং হিসেবে বিবেচিত, যা একই আইনের ধারা-৪ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য।

বনানীর আলোচিত দ্য রেইন ট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণীতে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার হোসেনের ছেলে সাফাত ও তার সহযোগীরা।

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীতে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে প্রায় ১৫ মণ স্বর্ণ ও হীরার অলঙ্কার জব্দ করা হয়। পরে এ সব অলঙ্কার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া হয় ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ২৩ অক্টোবর   ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস

Scroll to Top