রাজধানীর ধানমন্ডিতে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের জামিনাদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খরিজ করে রোববার (২৫ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ভার্চ্যুয়াল আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ আদেশের ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে ইরফান সেলিমের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
গত ১৮ মার্চ হাইকোর্ট ইরফান সেলিমকে জামিন দেন। ওই জামিনাদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে ২৮ মার্চ ৪ সপ্তাহের জন্য তার জামিন স্থগিত করেছিলেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
পরে জামিনের ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার (স্টে ভ্যাকেট) চেয়ে আবেদন করেন ইরফান সেলিম। সেটিও শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান চেম্বার আদালত।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর ভোরে ভুক্তভোগী নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম নিজেই বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
ওইদিন ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম আলী মিয়া জানান, এই মামলায় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম (৩৭), তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ (৩৫), হাজী সেলিমের মদীনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু (৪৫), গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ (৩০) অজ্ঞাতপরিচয় দু’তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলবো’।
এরপর বের হয়ে ওয়াসিমকে কিল-ঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
মামলার পর র্যাব ইরফান সেলিমকে তার বাসা থেকে আটক করে।
নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করে ইরফান সেলিম। এরপর গত ২৭ জানুয়ারি এ মামলায় রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। সেই রুলের রায় ইরফানকে জামিন দেন হাইকোর্ট। ওই জামিনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।