বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সাতদিনের লকডাউন চলাকালে হাইকোর্ট বিভাগে ভার্চ্যুয়ালি বিচারকাজ শুরু হয়েছে। তবে অতি জরুরি বিষয় ছাড়া অন্য আবেদন শুনবেন না বলে আইনজীবীদের জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আজ মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে বিচারকাজের শুরুতে এই বেঞ্চ আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, প্রধান বিচারপতির গঠনবিধি আপনারা দেখছেন। গঠন বিধি অনুসারে জরুরি হলে হবে না, অতি জরুরি হতে হবে। শুধু মক্কেলের জন্য জরুরি বিষয়ে মামলা ফাইল করতে হবে, এটা এখন না। এটা ইনশাআল্লাহ সামনে পাবেন। এ হিসেবে মেনশন করবেন।
সোমবার চারটি বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চ জরুরি রিট মোশন গ্রহণ করবেন।
জরুরি সব ধরনের দেওয়ানি মোশন গ্রহণ করবেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের দ্বৈত বেঞ্চ।
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের দ্বৈত বেঞ্চ জরুরি ফৌজদারি মোশন গ্রহণ করবেন। এছাড়া বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ কোম্পানি ও অ্যাডমিরালটি সংক্রান্ত আবেদনপত্র শুনানির জন্য গ্রহণ করবেন।
লকডাউনের মধ্যে আদালত কীভাবে চলবে সে বিষয়ে গত রোববার পৃথক তিনটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে এ বিষয়ে জারি করা আপিল বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবজনিত উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম আগামী ৫ এপ্রিল থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত সীমিত পরিসরে পরিচালিত হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা হতে চেম্বার আদালত অতিব জরুরি বিষয়ে শুনানি করবেন।
হাইকোর্ট বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৫ এপ্রিল থেকে এফিডেভিট জরুরি বিষয়ে রিট, দেওয়ানি ও ফৌজদারি সংক্রান্তে একটি করে ডিভিশন বেঞ্চ এবং কোম্পানি ও অ্যাডমিরালটি সংক্রান্তে একটি বেঞ্চ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে শুনানি করবেন।
নিম্ন আদালতের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে এবং অন্যান্য সব অধস্তন আদালত/ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পরিচালনা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় প্রত্যেক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শারীরিক উপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করবেন।
তবে লকডাউন বলতে এক ধরনের জরুরি অবস্থাকালীন ব্যবস্থাবিধিকে বোঝায় যাতে কোনও আসন্ন বিপদের হুমকির প্রেক্ষিতে সাময়িকভাবে কোনও নির্দিষ্ট এলাকা বা ভবনের ভেতরে বাইরের মানুষের প্রবেশ এবং ঐ এলাকা বা ভবন থেকে মানুষের বের হওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সাধারণত কতৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কোনও ব্যক্তি তাঁর ক্ষমতাবলে এই অবরুদ্ধকরণ ব্যবস্থাবিধি জারি করতে পারেন।