যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপনে এ দাবি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। তবে এদিন আসামি মফিজুর রহমানের পক্ষে তার আইনজীবী এ এফ এম গোলাম ফাত্তাহ যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। তবে আসামি পাপিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী সাখাওয়াত উল্লাহ ভূইয়া আংশিক যুক্তি উপস্থাপন করেন। পরে আদালত অবশিষ্ট যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আগামী রবিবার দিন ধার্য করেন।
এদিকে গত ৯ সেপ্টেম্বর আদালতে অস্ত্র আইনে করা মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন পাপিয়া দম্পতি। পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাবের উপপরিদর্শক আরিফুজ্জামান সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এ মামলায় মোট ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন সাক্ষ্য দেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ উপপরিদর্শক সুধাংশু সরকার, মো. শাইরুল ইসলাম ও র্যাবের উপপরিদর্শক আরিফুজ্জামান আদালতে সাক্ষ্য দেন। এদিন সাক্ষী সুধাংশু সরকার, মো. শাইরুল ইসলামের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হলেও তদন্ত কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানের আংশিক সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এ সময় আদালত বাকি সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার জন্য ৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট মামলার জব্দ তালিকার সাক্ষী র্যাবের উপপরিদর্শক সাইফুল আলম আদালতে সাক্ষ্য দেন। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। একই দিন মামলার বাদী র্যাবের ডিএডি শফিকুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য শেষ হয়। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণের তৃতীয় দিন ২ সেপ্টেম্বর আদালতে তাদের বিরুদ্ধে আরো পাঁচজন সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন- এএসআই সুমন মিয়া, সিপাহি ফারুক হোসেন, সিপাহি আলেয়া খাতুন, সঙ্গীয় ফোর্স জীবন চন্দ্র ও বাড়ির ম্যানেজার দীপ্ত দাস। পরে গত ৩ সেপ্টেম্বর জব্দ তালিকার সাক্ষী পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক জামাল ও জনৈক হাবিবুর রহমান সাক্ষ্য দেন। পরে আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৬ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
এদিকে গত ২৫ আগস্ট আদালত অভিযোগ গঠন করেন। পরে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৩১ আগস্ট, ১, ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। গত ১৮ আগস্ট শুনানির জন্য আদালত এ দিন ধার্য করেন। গত ২৯ জুন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের উপপরিদর্শক আরিফুজ্জামান শেরেবাংলানগর থানার অস্ত্র আইনে করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শেরেবাংলানগর থানার অস্ত্র মামলায় তাদের দুজনকে পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ১০ মার্চ একই মামলায় ফের দুজনকে পাঁচ দিন করে দশ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ফার্মগেট এলাকার ২৮ নম্বর ইন্দিরা রোডে অবস্থিত রওশনস ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেকের পাতা, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র্যাব।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।