ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের (১৫) প্রথম আলোর সাময়িকী ‘কিশোর আলোর’ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলা বিচারের জন্য বদলি হয়েছে। মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় আজ রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম তা বদলির আদেশ দেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ জানান, এই মামলায় সব আসামি জামিনে থাকায় মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়। এরপর সিএমএম বরাবর নথি পাঠিয়ে দেন বিচারক। সেখান থেকে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারের জন্য বদলি করা হবে।
এ মামলার আসামিরা হলেন— প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হক, কবির বকুল, শুভাসিষ প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম পাভেল, শাহ পুরান তুষার, জসিম উদ্দিন তপু, মোশারফ হোসেন, মো. সুমন ও কামরুল হওলাদার।
গত ২ সেপ্টেম্বর আনিসুল হকসহ ৫ আসামির মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছিলেন একই আদালত। পরদিন এই ৫ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন— কবীর বকুল, শুভাশীষ প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম পাভেল, শাহ পুরান তুষার ও শাহ পুরান তুষার।
আর মতিউর রহমানসহ অন্য ৫ জন আগেই জামিন নেন। তাই এই মামলার ১০ আসামির সবাই এখন জামিনে।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আলিম এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইমুল আবরার নিহত হওয়ায় কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
এরপর প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অন্য ৫ আসামি জামিন নেন।
গত বছর ১ নভেম্বর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাইমুল আবরার রাহাত নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। ওই দিন বিকেলে বিদ্যুতায়িত হলে তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর গত বছর ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান দৈনিক প্রথম আলার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং কিশোর আলোর প্রকাশক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন। তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় অবহেলা জনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়।
ওই দিন আদালত শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের লাশ দ্রুত কবর থেকে তুলে ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে এই ঘটনায় হওয়া অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে নতুন মামলা একীভূত করে তদন্ত করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।