মহামারী করোনার মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে অভিযানের ফলে বেড়িয়ে এসেছিলো অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এবার যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবরে পাঠানো চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটের ওপর আদেশের জন্য আগামী মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২৩ আগস্ট) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।
পরে অমিত দাসগুপ্ত বলেন, আজ শুনানি শেষে আদালত আগামী মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন রেখেছেন। এর আগে গত ১৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রফিকুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান এ রিট দায়ের করেন।
রিটে গত ৪ আগস্ট পাঠানো ওই চিঠি কেন অসাংবিধানিক ও বাতিল করা হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এছাড়া রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চিঠির কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব বরাবরে পাঠানো স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের পরে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান করছেন। একটি হাসপাতালে একাধিক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করাতে হাসপাতালগুলোর স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং এ কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সার্বিক কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করার জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাও সদস্য হিসেবে আছেন। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো অপারেশন পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা করা যাবে।
এমতাবস্থায় যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ রূপ অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা এবং জরুরি অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক পরিচালনা করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আইনজীবী ইয়াদিয়া রিট দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আজকে একটি বেঞ্চে এ রিট দাখিল করা হতে পারে।
তিনি বলেন, যদি আগে পরামর্শ করে অভিযান পরিচালনা করা হয় তাহলে তো খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সংশ্লিষ্টরা আলামত লুকিয়ে ফেলতে পারে। আর অভিযান থেকে বিরত থাকলে তো এ খাতে দুর্নীতি মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়বে।
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।