যশোরে পুলিশি নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্র ইমরান হোসেনের ডোপ টেস্ট প্রতিবেদন এবং তার চিকিৎসা সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক সকল কাগজপত্র দাখিল করতে যশোরের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৫ জুলাইয়ের মধ্যে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে তা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী আদেশের জন্য ৫ জুলাই ধার্য করা হয়েছে।
বিচারপতি জেবিএম হাসানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। রিট আবেদনকারীপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার।
রবিবার আদেশের আগে সিভিল সার্জন এবং এসপির পক্ষ থেকে দেওয়া পৃথক দুটি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। সিভিল সার্জনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ছাত্রের কিডনি এখন পুরোপুরি নরমাল এবং সে শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে। ওই প্রতিবেদনে ইমরানকে কি কি চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর পুলিশি প্রতিবেদনে ইমরানের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে ইমরানকে মাদকসেবী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে ইমরানকে আটককারী তিন পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরানের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে অর্থ নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিবেদন দেখে আদালত ইমরানের ডোপ টেস্ট রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেন।
ইমরানের কিডনি নষ্ট হবার উপক্রমের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত, ইমরানের জন্য ক্ষতিপূরণ এবং তার চিকিৎসা যাবতীয় ব্যয় বিবাদীদের বহন করার নির্দেশনা চেয়ে গত ১৮ জুন রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দুইজন আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার। এই রিট আবেদনে গত ২৩ জুন হাইকোর্ট এক আদেশে সিভিল সার্জন ও এসপি কাছে প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। এ নির্দেশে গতকাল নির্ধারিত দিনে তারা প্রতিবেদন দাখিল করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, গত ৩ জুন যশোর জেলার সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের নেছার আলীর ছেলে ইমরান হোসেন সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ অফিসার কর্তৃক নির্মম প্রহারের শিকার হন। এ ঘটনায় ৯ জুন \’যশোরে পুলিশি নির্যাতনে কলেজছাত্রের কিডনি নষ্ট\’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে যশোর শহরের বেসরকারি কুইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইমরানের দুটি কিডনির কার্যকারিতা খুবই খারাপ অবস্থা আছে এবং ৭ জুন থেকে কিডনি ডায়ালাইসিস চলছে বলে জানা যায়। যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক এবং ইমরানের মৌলিক অধিকারের লংঘন।
এর আগে গত ১১ জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে ওই সংবাদে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।