রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) আজ বুধবার মিয়ানমারের বক্তব্য শুনবেন। গতকাল মঙ্গলবার আইসিজেতে ১৭ জন বিচারপতির উপস্থিতিতে প্রথম দিনের শুনানি হয়। এদিন আদালতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির উপস্থিতিতে অভিযোগকারী আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু মানবতাবিরোধী নৃশংসতার অভিযোগগুলোর সারাংশ তুলে ধরেন।
গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী তামবাদু বলেন, বিশ্ববিবেকের কালিমা মোচনে আর দেরি করা চলে না। একমাত্র এই আদালতই শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারে, আশা জাগাতে পারে। আন্তর্জাতিক বিচারব্যবস্থাকে অবশ্যই কার্যকর করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আইসিজে মিয়ানমারকে বলুক যে এখনই রোহিঙ্গা শিশুদের হত্যা বন্ধ করতে হবে, নৃশংসতার অবসান ঘটাতে হবে।’
গাম্বিয়ার পক্ষে আদালতে গণহত্যার উদ্দেশ্য, গণহত্যার কার্যক্রম, ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা, গাম্বিয়া এবং মিয়ানমারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির পটভূমি, আদালতের এখতিয়ার এবং অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ হিসেবে কী কী ব্যবস্থা প্রয়োজন, সেগুলো তুলে ধরেন আরও সাত আইন বিশেষজ্ঞ।
রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গাম্বিয়া যেসব অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যাসহ সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধ রাখা, গণহত্যার কোনো আলামত নষ্ট না করা, জাতিসংঘের তদন্তকারীসহ অন্যদের আরাকানে ধ্বংসপ্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে অবাধে প্রবেশাধিকার দেওয়া।
আদালতের প্রথম দিনের কার্যক্রম শেষে শুনানি মুলতবি করা হয়। আদালতের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুলকোয়াই আহমেদ ইউসুফ ঘোষণা করেন, শুনানির দ্বিতীয় দিন বুধবার মিয়ানমারের বক্তব্য শোনা হবে। কাল বৃহস্পতিবার আদালত বসবেন দুই বেলা। এদিন সকালে গাম্বিয়া ও বিকেলে মিয়ানমারের জবাব ও নতুন কোনো যুক্তি থাকলে সেগুলো শোনা হবে। আদালতের রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে ধারণা দেওয়া হয়, চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আদালত সিদ্ধান্ত দিতে পারেন।