পাঁচ বছর আগের রাজধানীর খিলগাঁওয়ে জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। ওই মামলার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাঁকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী ইসরাইল হোসেন ও তাঁর ছেলে শরীফ হোসেনকে গুলি করে ৩৮ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থলেই নিহত হন শরীফ হোসেন। এর দুই বছর পর তাঁর বাবা ইসরাইল হোসেন ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঘটনায় নিহত ইসরায়েল হোসেনের ভাই মুজিবুর রহমান
বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৬ সালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তিনজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। কিন্তু আদালত তা আমলে না নিয়ে পুনরায় মামলাটি তদন্ত করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে বুধবার আদালতে হাজির করে তাঁকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। একই সঙ্গে এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে এই জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে তাঁকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে পুলিশ বলেছে, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া কোরবানি ঈদের সময় শাজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া, কমলাপুর, সবুজবাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করতেন। এ ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে রাজউক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রেলভবন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ফকিরাপুলসহ বেশির ভাগ এলাকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন খালেদ মাহমুদ। মাদক ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করার জন্য গড়ে তোলেন বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র।