সামাজিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতরা যেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন না পায় সে বিষয়ে সবাইকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বুধবার রাজধানীর নিবন্ধন অধিদফতর প্রাঙ্গণে জেলা ও দায়রা জজ এবং সমমর্যাদার বিচারকদের নতুন গাড়ির চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, \’দেশে শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। অনেক সময় আইনের ফাঁকফোকরে অপরাধী ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এসব ঘটনার ক্ষেত্রে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর বিজ্ঞ বিচারিক আদালতে এ ধরনের মামলাগুলো বিলম্বিত হয় না। আপনারা নুসরাতের মামলা দেখছেন এবং আমি আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে পারি, এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন (অভিযোগ পত্র) পাওয়ার পর দ্রুততার সঙ্গে সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিচার কাজ সম্পন্ন হবে। যে অপরাধগুলো হচ্ছে আমার মনে হয় সময় এসেছে একটু কঠোর হওয়ার, সময় এসেছে এদের জেলখানায় রাখার। সামাজিক পরিস্থিতিকে আমলে নিয়ে আমি শুধু অনুরোধ করছি, এদিকে যেন সকলের মনোযোগটা থাকে।\’
পাবনার ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় রায় নিয়ে বিএনপি নেতাদের মন্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, \’আমার মনে হয়, উনাদের সময় উনারা এ ধরনের রায় লিখে দিতেন সে অভিজ্ঞতা থেকে এসব বলছেন। আমি স্পষ্টভাবে বলতে পারি, বিচার বিভাগকে আমরা কোনোভাবেই চাপ দেই না। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বিএনপি বলে বেড়াচ্ছে খালেদা জিয়া জামিনযোগ্য অপরাধ করেছেন তারপরও তাকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। সকলেই জানেন এতিমের টাকা চুরি করার জন্য খালেদা জিয়াকে বিজ্ঞ বিচারিক আদালত পাঁচ বছর জেল দিয়েছিলেন। হাইকোর্ট সে রায়ের আপিলে আরও ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছরের জেল দিয়েছেন।\’
তিনি আরও বলেন, \’এতিমখানার টাকা আত্মসাতের জন্য আবার বিচারিক আদালত খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের জেল দিয়েছেন। সেটাও জামিনযোগ্য নয়। তার পরও বিএনপি সব সময় ভ্রান্তিমূলক তথ্য জনগণকে দিচ্ছেন। তারা যে মিথ্যার ওপর রয়েছেন এগুলো সেটারই প্রমাণ। বিএনপি আমলে সারা বাংলাদেশের ৬১টি আদালতে বোমা হামলা হয়েছে এবং সেই বোমা হামলায় দুই জন বিচারক হতাহত হয়েছেন। এই সব কিছু বিবেচনা করে জনগণ যাতে সুষ্ঠু বিচার পায়, বিচারকার্য যেন বিলম্বিত না হয়, সেইজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে আমরা বিচারকদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেছি।\’
গাড়ির চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব গোলাম সারোয়ার, বিকাশ কুমার সাহা ও হাবিবুর রহমান, সলিসিটর জেসমিন আরা, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহা পরিদর্শক খান মো আব্দুল মান্নান সহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।