আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ রান্না। এই রান্নাকেই কেউ কেউ আবার শিল্পের রূপ দিয়েছেন। কিন্তু যেদিন রান্না করতে ইচ্ছা করে না, সেদিন অনেকেই বাইরে হোটেল কিংবা রেস্তোরাঁয় পছন্দের কোনো খাবার খেয়ে নেন।
তবে আপনি কতক্ষণ সময় ধরে রাঁধতে পারবেন, তারও একটি সময়সীমা রয়েছে। একটা সময় পর ক্লান্তি চলে আসবে এমনিতেই। তবে এসব ক্ষেত্রে যেকোনো শেফ একটু বেশিই কাজ করেন। রান্না করাই যখন তার পেশা তখন নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টায় কেউ ৭ বা কেউ ১০ ঘণ্টা রান্না করেন।
তাই বলে ১০০ ঘণ্টা রান্না! এই কথায় যে কারও চোখ ছানাবড়া হবে নিশ্চিত। এমন কাণ্ডই করেছেন নাইজেরিয়ার শেফ হিলদা বাচি। সেই সঙ্গে গিনেস বুকে রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন তিনি। হিলদা বাচি ২০২৩ সালের ১৮ মে (বৃহস্পতিবার) রান্না শুরু করেন। ১০০ ঘণ্টা পর (সোমবার) ২২ মে রাতে তিনি চুলা বন্ধ করেন।
এই রেকর্ড গড়ার জন্য রান্নার ফাঁকে প্রতি ঘণ্টা শেষে পাঁচ মিনিটের বিরতি পেয়েছেন বাচি। তবে আলাদাভাবে পাঁচ মিনিট করে সময় না নিয়ে ১২ ঘণ্টা পরে একবারে এক ঘণ্টা বিরতি ভোগ করতে পারতেন তিনি। বিশ্রাম বা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গিনেস কর্তৃপক্ষ এই বিরতি দিয়ে থাকে।
তার এই রেকর্ড করার সময় তাকে উৎসাহ দিতে এসেছিলেন হাজার হাজার স্থানীয় মানুষ। তার পাশে অনেক তারকাও ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে অনলাইন মাধ্যমে এই কর্মযজ্ঞ পর্যবেক্ষণ করা হয়।
বাচি এই ১০০ ঘণ্টা নাইজেরিয়ার ৫৫টি বিভিন্ন খাবার রান্না করেন। এর মধ্যে ছিল বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, ঝোল তরকারি, বিভিন্ন ধরনের আমিষের পদ। তিনি পশ্চিম আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার ‘জলফ ভাত’ রান্না করেছিলেন। সাধারণত লম্বা গড়নের চালের সঙ্গে টমেটো, পেঁয়াজ, মরিচ, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও মাংসের মিশেলে এই খাবার তৈরি করতে হয়।
বাচি বলেন, নাইজেরিয়ান খাবারই সেরা। যত বেশি রেসিপি প্রচার করা হবে, তত বেশি মানুষ এটি চেষ্টা করতে ইচ্ছুক হবে। নাইজেরিয়ান খাবার খুবই আরামদায়ক খাবার। মূলত তিনি তার নিজ দেশের খাবার প্রচারণার উদ্দেশ্যে এই রেকর্ড গড়ার পরিকল্পনা করেন।
হিলদা বাচির আগে এই রেকর্ডের অধিকারী ভারতের পাচক লতা টন্ডন। তিনি ২০১৯ সালে ৮৭ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট রান্না করে ‘একা একটানা দীর্ঘ সময় রান্নার’ রেকর্ড গড়েন।