ডায়েটের জন্য মধু খাওয়া অনেক আগে থেকে সকলের জানা। ওজন হ্রাস থেকে শুরু করে শক্তিবৃদ্ধির জন্য খাদ্য তালিকায় মধু খেতে বলেন পুষ্টিবিদরাও। সকালে উঠে পানিতে লেবু–মধু দিয়ে খেয়ে ব্যায়াম করলে দেখবেন দ্বিগুণ উৎসাহে ব্যায়াম করতে পারবেন। ব্যায়াম শেষে আবার গ্রিন টি–তে মধু মিশিয়ে খান। শরীরে যেমন শক্তি আসবে তেমনি পুষ্টিও পাবেন। সকালের নাস্তায় ফলের সাথে বা সিরিয়ালের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে সারা দিনই আপনাকে শক্তির জোগান দেবে।
এমন কি অফিসে শেষ দুপুরের ঘুম-ঘুমভাব কাটাতেও কাজে আসে মধু মেশানো গ্রিন টি। প্রচুর চিনি দিয়ে বানানো চা–কফি বা ঠাণ্ডা পানীয়র থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর মধু। তাই এখন থেকে চিনি একেবারেই না খেয়ে মধু রাখুন হাতের কাছে। খাঁটি মধুতে প্রচুর পরিমান অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে যার উপকারের শেষ নেই।
রান্না করতে গিয়ে হাত অল্প পুড়ে গেলে কিংবা কেটে গেলে এক ফোঁটা মধু লাগিয়ে দেখুন। কারণ এতে আছে জীবাণু ও ছত্রাকনাশক গুণ। ঠাণ্ডা লেগে গলা ব্যথা হলেও খেতে পারেন মধু।
আবার প্রচুর অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার ফলে শরীরের উপকারি ব্যাকটেরিয়া যদি প্রায় নিঃশেষ হয়ে যায়, তা তৈরিতেও মধু অসাধারণ কাজ করে। গবেষকরা বলেন, প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক হিসাবে এর তুলনা নেই। অর্থাৎ এর প্রভাবে শরীরের উপকারি ব্যাকটেরিয়ারা আবার নতুন করে জেগে ওঠে।
নিয়মিত মধু খেলে খারাপ কোলেস্টেরলের ক্ষতি করার ক্ষমতা ও রক্তচাপ কমে যায়৷ স্ট্রোক, ইসকিমিক হার্ট ডিজিজ ও হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও কমতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
তবে অনেকেই মনে করেন এত মধু খেলে ওজন বাড়বে আর তাতেই হতে পারে হৃদরোগ। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, চিনির বদলে মধু খেলে পুষ্টিহীন ক্যালোরির বদলে পুষ্টিকর ক্যালোরি শরীরে প্রবেশ করে। তাই এই অল্প মধুর কারণে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা নেই বরং কিছুটা ওজন কমবে। বিভিন্ন গবেষণায় সে রকমই প্রমাণিত হয়েছে।
মধু নিয়ে গবেষণা
হার্টের উপর মধুর প্রভাব বুঝতে শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলকে টেষ্টটিউবে নিয়ে তাতে মধু দিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন এই খারাপ কোলেস্টেরলের হার্টের ক্ষতি করার পদ্ধতিকে ধীর করে দেয় মধু। আর এই পদ্ধতি ধীর হওয়া মানে রক্তবাহী ধমনিতে কম চর্বি জমা যাকে অন্য ভাবে বলা হয় ধমনি ব্লক হওয়া।
যার ফলে ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক সব কিছুরই আশঙ্কা কিছুটা কমে। তবে ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে মধু খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।