প্রতিদিন সারা বিশ্বে লাখো মানুষ প্রাণ হারান কিডনির সমস্যায়। অনেকেরই কিডনি খারাপ হওয়ার পর ডোনার বা বিকল্প কিডনি না পাওয়ার কারণে মৃত্যুর অপেক্ষা করা ছাড়া অন্য কোনো পথ থাকত না। ডায়ালাইসিসের যন্ত্রণা কতটা ভয়ানক হতে পারে, তা রোগী মাত্রই জানেন। এখন সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির এক বিরাট সম্ভাবনা তৈরি হলো। গবেষকরা কৃত্রিম কিডনি তৈরি করলেন যা আসল কিডনির মতোই কাজ করবে। আরো আশার কথা যে এর দামও আকাশছোঁয়া হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যানবারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মাইক্রোচিপ ফিল্টার এবং কিডনির কোষ দিয়ে কৃত্রিম কিডনি তৈরি করেন যা একেবারে আসল কিডনির মতোই কাজ করবে এবং এটি মানবশরীরে প্রতিস্থাপনযোগ্য। এই বায়োসিনথেটিক কিডনি শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ, পানি এবং বিষযুক্ত বর্জ্য বের করে দিতে পারবে যেমনটা আসল কিডনি করে থাকে।
গবেষকদের প্রধান ডা. উইলিয়াম এইচ ফিসেল বলেন, \’মাইক্রোচিপটা তৈরি করাই কঠিন কাজ ছিল। সিলিকন ন্যানোটেকনলজির মাধ্যমে তৈরি এই বিশেষ ধরনের চিপই ফিল্টারের কাজ করে। মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স সংস্থাগুলি আধুনিক কম্পিউটার তৈরি করতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেটাই ব্যবহার করেছি আমরা।
এই কিডনি শরীরে প্রতিস্থাপন করা যাবে এবং এর জন্য কোনো রকম বিদ্যুৎ সংযোগের প্রয়োজন নেই। \’
প্রত্যেকটি কিডনিতে ১৫টি এমন মাইক্রোচিপ ব্যবহার করা হয়েছে। নানা স্তরে ভাগ করে এই চিপগুলি সাজানো রয়েছে। এই চিপগুলোকে ঘিরে থাকবে আসল কিডনির টিস্যু এবং কোষ। এই টিস্যু এবং কোষই ক্ষতিকারক বিষযুক্ত বর্জ্য চিনতে সাহায্য করবে। প্রয়োজনীয় লবণ এবং অন্যান্য দ্রব্য যা শরীরের জন্য প্রয়োজন তা পুনরায় শোষণ করবে।
এর পর গবেষকরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন তা হলো এই কিডনির মধ্যে দিয়ে ক্ষতি না করে রক্ত চালনা করানো। এ কাজে তাঁদের সাহায্য করেন আমান্ডা বাক। পেশায় একজন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আমান্ডা কৃত্রিম কিডনির গঠন পরিবর্তন করে এই কঠিন কাজটি সহজ করে দেন। এর জন্য তিনি থ্রিডি প্রিন্টারের সাহায্য নেন। পুরোপুরি আত্মপ্রকাশ করার আগে এখনো বেশ কয়েকটি পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে এই কৃত্রিম কিডনিকে। তবে গবেষকরা আশাবাদী, খুব শিগগিরই তাঁরা কিডনি সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময় : ১৬৫৩ ঘণ্টা, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/ডিএ