দেহের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ ভিটামিন ডি সূর্যের আলো থেকেই পাওয়া যায়। সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসার পর ত্বক ভিটামিন ডি তৈরি করে। ফলে এটিই ভিটামিন ডির অন্যতম প্রধান উৎস।
আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান হলো ভিটামিন ডি। সারা বিশ্বে এখন ভিটামিন ডির ঘাটতি একটি বড় সমস্যা। ডায়াবেটিস, প্রজনন সমস্যা থেকে শুরু করে হাড়ক্ষয় বা অস্টিওপেরোসিস, হৃদ্রোগ-স্ট্রোক, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম ও দৈহিক স্থূলতারও কারণ হতে পারে ভিটামিন ডির ঘাটতি।
ভিটামিন ডি পেতে গায়ে রোদ লাগাতে হবে, এটা আজকাল প্রায় সবাই জানেন। কিন্তু দিনের ঠিক কোন সময়ের রোদ গায়ে লাগাতে হবে, সেই বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেকে।
ভিটামিন ডি কোন সময়ে ভালো পাওয়া যায়?
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে সূর্যালোক বা রোদ ভিটামিন ডির খুব ভালো উৎস। বাইরে বের হয়ে যখন দেখবেন, আপনার ছায়া আপনার তুলনায় ছোট, সেই সময়ের রোদে আপনার ত্বক সবচেয়ে ভালো ভিটামিন ডি উৎপন্ন করতে পারে। দেহের যত বেশি অংশ খোলা রেখে রোদে থাকবে, তত বেশি ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে। যেমন শুধু হাত-মুখ খোলা রেখে রোদে থাকার চেয়ে পিঠসহ শরীরের অন্যান্য অংশ খোলা রাখলে বেশি ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি তৈরিতে ত্বকের রং বিশেষ প্রভাব ফেলে। তবে আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষের গায়ের রং শ্যামবর্ণ। শরীরে ভিটামিন ডি শোষণ হওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি বাধা। কারণ, শ্যামবর্ণের ত্বকে মেলানিন নামক রঞ্জক পদার্থ বেশি থাকে। মেলানিন অতিবেগুনি রশ্মিকে বাধা দেয়। যেমন কারও ত্বকের রং যদি বেশি গাঢ় হয় (অর্থাৎ ত্বকে বেশি মেলানিন থাকলে), তাহলে তা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি প্রবেশে বেশি বাধা দেবে। ফলে ভিটামিন ডি উৎপাদন বিঘ্নিত হবে। এ জন্য যাঁদের গায়ের রং যত কালো বা গাঢ়, তাঁকে তত বেশি রোদে থাকতে হবে। যাঁদের গায়ের রং উজ্জ্বল, তাঁদের প্রতিদিন ২০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকলেই চলবে।
ভিটামিন ডি পেতে হলে অবশ্যই ত্বকে সরাসরি সূর্যের আলো লাগাতে হবে। সেক্ষেত্রে পোশাক বা সানস্ক্রিন সরাসরি ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরিতে বাধা দেয়। তাই মুখে সানস্ক্রিন মেখে বের হলেও হাত-পা বা শরীরের অন্য কোনো স্থান যেন উন্মুক্ত থাকে, সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। মাঝেমধ্যে সানস্ক্রিন ছাড়াই রোদে বের হতে চেষ্টা করুন।
বয়স বাড়তে থাকলে ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরির ক্ষমতা কমতে থাকে। ফলে বেশি বয়স হলে হাড়ক্ষয়ের রোগও বাড়তে থাকে। বয়স বাড়তে শুরু করার পর তাই সারাক্ষণ বাড়িতে বসে না থেকে নিয়মিত গায়ে রোদ লাগাতে হবে।