হাঁটু ব্যথার একটি খুব সাধারণ একটি কারণ অস্টিও আর্থ্রাইটিস। এই রোগে মূলত হাঁটুর মধ্যে যে দুটি হাড় সংযুক্ত থাকে, তাদের মধ্যকার দূরত্ব কমে যায় এবং দুটি হাড়ের মাথায় আরটিকুলার কারটিলেজ নামের এক ধরনের পদার্থ থাকে, যা হাড়কে পিচ্ছিল করে ও জয়েন্টের মধ্যে ফ্রি মুভমেন্টে সাহায্য করে সেটি ক্ষয় হয় বা নষ্ট হয়। এতে তাদের মধ্যে ঘর্ষণ হয় এবং ব্যথা নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ু সক্রিয় হয়ে ব্যথা করে। মাঝ বয়সী থেকে শুরু করে অধিক বয়স্ক ব্যক্তিদের মাঝে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
কারণ : বিভিন্ন কারণে এই রোগ হতে পারে। আর কারণগুলোর মধ্যে ১ নম্বর হলো জেনেটিক বিষয়। সাধারণত এটা জন্মগতভাবেই পেয়ে থাকেন মা-বাবার কাছ থেকে। আর যাঁরা বিভিন্ন মেকানিক্যাল কাজ বেশি করেন, যেমন : ড্রিল মেশিন চালান, কাঠ কাটেন, করাতের কাজ করেন, ভারী জিনিস তোলেন এই ধরনের কারণে জয়েন্টগুলো একটু ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তা ছাড়া যাঁরা খেলাধুলা করেন তাঁদেরও অন্যান্য মানুষের থেকে অস্টিও আর্থ্রাইটিসের আশঙ্কা বেশি। এরপর নারীর ৪৫ বছর পর, মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, মেনোপজ হয়ে যাওয়ার পর অস্টিও আর্থ্রাইটিসের আশঙ্কা থাকে। পুরুষের চেয়ে নারীর অস্টিও আর্থ্রাইটিস হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ধূমপান যাঁরা করেন, তাঁদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদেরও অস্টিও আর্থ্রাইটিস হওয়ার প্রবণতা বেশি। আবার জন্মগত কতগুলো হাঁড়ের রোগ আছে, তাঁদেরও অস্টিও আর্থ্রাইটিস হতে পারে। এসব হাড়ের রোগের জন্য ১০ বছর বয়সেই এই রোগ কারো কারো ক্ষেত্রে হতে পারে।
এই রোগ থেকে বাঁচার উপায় : আক্রান্ত হওয়ার আগে ওজন কমানো, ধূমপান বন্ধ করতে হবে। এরপর হাড়ের ঘনত্ব যেন ঠিক থাকে সে জন্য ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ঠিকমতো খেতে হবে।
অস্টিও আর্থ্রাইটিসে করণীয়
হাঁটু ব্যথার একটি খুব সাধারণ একটি কারণ অস্টিও আর্থ্রাইটিস। এই রোগে মূলত হাঁটুর মধ্যে যে দুটি হাড় সংযুক্ত থাকে, তাদের মধ্যকার দূরত্ব কমে যায় এবং দুটি হাড়ের মাথায় আরটিকুলার কারটিলেজ নামের এক ধরনের পদার্থ থাকে, যা হাড়কে পিচ্ছিল করে ও জয়েন্টের মধ্যে ফ্রি মুভমেন্টে সাহায্য করে সেটি ক্ষয় হয় বা নষ্ট হয়। এতে তাদের মধ্যে ঘর্ষণ হয় এবং ব্যথা নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ু সক্রিয় হয়ে ব্যথা করে। মাঝ বয়সী থেকে শুরু করে অধিক বয়স্ক ব্যক্তিদের মাঝে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
এই রোগ থেকে বাঁচার উপায় : আক্রান্ত হওয়ার আগে ওজন কমানো, ধূমপান বন্ধ করতে হবে। এরপর হাড়ের ঘনত্ব যেন ঠিক থাকে সে জন্য ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ঠিকমতো খেতে হবে।
নিয়মিত হাঁটুর ব্যায়াম করা। খাদ্যাভ্যাস সঠিক রাখা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা। সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় না করেই বারবার জয়েন্টের ভেতর-বাইরে থেকে ইনজেকশন নেওয়ার কারণেও হাঁটু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেসব জয়েন্ট আক্রান্ত হয়, এসব জয়েন্টের জন্য ফিজিওথেরাপি, বিভিন্ন অকুপেশনাল থেরাপি আছে—সেই সাহায্যকারী থেরাপিগুলো দিলে জয়েন্টগুলো ধীরে ধীরে কর্মক্ষম হয়ে যায় এবং ভালোর দিকে থাকে। কারো পেশা যদি ওজন তোলা বা মেকানিক্যাল কঠিন কাজ হয়—এগুলো সাধারণত অস্টিও আর্থ্রাইটিস হতে সাহায্য করে। প্রয়োজন হলে তাঁকে পেশা পরিবর্তন করতে হবে। তবে লেখাপড়া, সাধারণ ঘরের কাজ এসব করলে কোনো সমস্যা নেই।
সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা : হাঁটু জয়েন্টে অস্টিও আর্থ্রাইটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। একবার হলে বন্ধ করা যায় না। তবে প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি চিকিৎসার মাধ্যমে ক্ষয়পূরণ ও হাঁটু ব্যথা নিরাময় সম্প্রতি সময়ের একটি কার্যকরী ও গবেষণাধর্মী চিকিৎসা।
পরামর্শ দিয়েছেন : ডা. মোহাম্মদ আহাদ হোসেন
কনসালট্যান্ট ও পেইন ফিজিশিয়ান
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা