মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারা দেশে হচ্ছে বৃষ্টি। এই সময়ে ত্বক ও চুল নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। সবচেয়ে বেশি ঝামেলায় থাকেন চুল নিয়ে। অনেকের ধারণা, বছরের অন্য সময় থেকে বর্ষায় চুল পড়ার প্রবণতা থাকে একটু বেশি। কারণ এই সময় বেশি থাকে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ। চুল বারবার পানির সংস্পর্শে আসলে গোড়া নরম হয়ে যায়। এছাড়া দীর্ঘক্ষণ মাথার ত্বক ভেজা থাকায় ছত্রাক সংক্রমণের আশংকাও থাকে।
স্বাভাবিকভাবে প্রতিটি মানুষের দিনে গড়ে ১০০টি চুল পড়ে। যদি চুল ঝরার হার এর চেয়ে বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই বিষয়টি চিন্তার। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ভারতীয় চিকিৎসকদের পরিচালিত ইউটিউব চ্যানেল ‘ডক্টরস সার্কেল: ওয়ার্ল্ড লারজেস্ট হেলথ প্ল্যাটফর্মে’ তুলে ধরা হয়েছে বর্ষায় চুল ঝরা রোধে বেশ কিছু পরামর্শ। যা রোধ করতে পারে আপনার চুল পড়া।
১. বৃষ্টিতে ভিজে গেলে বাড়ি ফিরেই চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন। চেষ্টা করবেন সঙ্গে সঙ্গে চুল ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে। আর ভেজা চুল কিন্তু একদমই আঁচড়ানো যাবে না। কারণ ভেজা চুলের গোড়া দুর্বল থাকে।
২. চাইলে চুলের আগা ছেঁটে দিতে পারেন এসময়। এতে চুলের জট কমবে। একই সঙ্গে চুল থাকবে ঝরঝরে।
৩. এই সময় মৃদু ও সালফেট মুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। তবে সপ্তাহে একদিন অ্যান্টি-ফাঙ্গাল শ্যাম্পু দিয়ে মাথা পরিষ্কার করতে পারেন। তাহলে ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ হবে না।
৪. বর্ষায় চুল রুক্ষ হয়ে যায়। তাই এসময় কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না। কন্ডিশনার চুলের আর্দ্রতা ধরে রেখে চুলকে নরম আর মসৃণ করবে।
৫. এই সময় চুল তাড়াতাড়ি শুকাতে অনেকেই হেয়ার ড্রায়ার বা স্ট্রেইটনার ব্যবহার করেন। তবে এগুলো চুলকে আরও ভঙ্গুর ও দুর্বল করে দেয়। তাই প্রাকৃতিকভাবে চুল শুকানোই উত্তম।
৬. হেয়ার কালার করা থেকে অন্তত এই মৌসুমে বিরত থাকুন। ভেজা আবহাওয়ায় চুলের এমনিতেই বেশ ধকল পোহাতে হয়, তার ওপর হেয়ার ট্রিটমেন্ট বা রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহারে চুল পড়ার হার বাড়তে পারে।
৭. ক্ষতিগ্রস্ত চুলের সুরক্ষায় গোসলের আগে হালকা গরম নারকেল তেল দিয়ে মাথার ত্বক মালিশ করতে পারেন।
পরিবর্তন আনুন ডায়েটে
চুল ভালো রাখতে আপনার ডায়েটেও কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। কারণ আপনি কী খাচ্ছেন, সেটি চুলের পুষ্টি মেটাতে ভূমিকা রাখে। যথাযথ প্রোটিন পেতে ডিম, বাদাম, মটরশুঁটি, গাজর এবং পালংশাকের মতো সবুজ শাকসবজি খেতে পারেন। কারণ এতে থাকে জিংক, আয়রন, ফ্যাটি এসিড, এবং ভিটামিন এ, ই, ও বি কমপ্লেক্স। যা চুল পড়ার হার কমাবে। প্রয়োজনে মাল্টিভিটামিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সেবন করতে পারেন। তবে তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে।