স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ, যা মস্তিস্কের রক্তনালির জটিলতার কারণে হয়। এতে কখনো রক্তনালি ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ হয়, যাকে বলে হেমোরেজিক স্ট্রোক। রক্তনালি ব্লক হয়ে নির্দিষ্ট অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হলে তাকে বলে ইস্কেমিক স্ট্রোক। এ ছাড়া স্বল্প সময়ের জন্য ব্ল্যাকআউট হয়ে যাওয়ায় একধরনের স্ট্রোক হয়, যা টিআইএ বা ট্রান্সিয়েন্ট ইস্কেমিক স্ট্রোক নামে পরিচিত।
কীভাবে বুঝবেন স্ট্রোক হয়েছে?
আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ একদিকে বেঁকে যায়
কথা অস্পষ্ট হয়ে যায়
শরীরের যেকোনো দিক হঠাৎ দুর্বল হয়ে যেতে পারে
আক্রান্ত ব্যক্তি শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন বা পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়
কী করতে হবে
কোনোভাবেই কালক্ষেপণ না করে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। বলা হয়, স্ট্রোকের রোগীদের ক্ষেত্রে প্রতি মিনিটে ৯০ লাখ নিউরন (মস্তিষ্কের কোষ) বা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় দেড় লাখ নিউরন নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য এ ক্ষেত্রে প্রতিটি সেকেন্ড রোগীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কী করা যাবে না
সঙ্গে সঙ্গে কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা কোনোভাবেই করা যাবে না, তাতে খাবার পেটে না গিয়ে ফুসফুসে ঢুকে এস্পিরেশন নিউমোনিয়া সৃষ্টি করবে, যা রোগীর জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর। অনলাইনে বিভিন্ন ভুলভাল চিকিৎসাপদ্ধতি প্রচার হয়ে থাকে; যেমন আঙুল ছিদ্র করে দেওয়া, মরিচের গুঁড়া জিবের নিচে দেওয়া। এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণা থেকে দূরে থাকতে হবে।
বারবার কাদের হয়, কেন হয়?
অনেকের একাধিকবার স্ট্রোক হতে দেখা যায়। যাঁরা মূলত নিচের এসব রোগে ভুগছেন এবং বদভ্যাস আছে, নিজের অবহেলা বা যেকোনো কারণেই হোক নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন না, তাঁদের ক্ষেত্রেই স্ট্রোক বারবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে—
উচ্চ রক্তচাপ
ডায়াবেটিস
রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি
তামাক/ধূমপায়ী
অ্যালকোহল সেবনকারী
স্লিপ অ্যাপনিয়ার (ওএসএ) রোগী
ওজন বেশি ও শারীরিক পরিশ্রম যাঁরা কম করেন
ওপরের সমস্যাগুলো যাঁদের আছে, তাঁদের অবশ্যই উচিত নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ও নিয়মিত ওষুধ খাওয়া। তাহলে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে।