পাইলসের যন্ত্রণা দ্রুত কমানোর ঘরোয়া উপায়

পাইলস বা হেমোরয়েড খুব পরিচিত ও যন্ত্রণাদায়ক একটি রোগ। এ রোগ হলে মলদ্বারে জ্বালা, টয়লেট করার সময় রক্তপাত, পেটে অস্বস্তি, বারে বারে পটির চাপ প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়।
.
বিশেষজ্ঞদের মতে, এশিয়া মহাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষ তাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে পাইলসের রোগে আক্রান্ত হন। এ রোগের বেশিরভাগ রোগীর বয়স থাকে ৪৫-৬৫ বছরের মধ্যে।

অনেক করণে এ রোগ হতে পারে। যেমন- কনস্টিপেশন, ক্রনিক ডায়ারিয়া, পারিবারিক ইতিহাস, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া, অতিরিক্ত ওজন, অ্যালার্জি, মাত্রাতিরিক্ত শরীরচর্চা, প্রেগন্যান্সি, অনেকক্ষণ ধরে পটি করার অভ্যাস প্রভৃতি।

আধুনিক ওষুধ বা অপারেশনের সাহায্যে এ রোগের চিকিৎসা করা যেতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘরোয়া পদ্ধতিগুলির এক্ষত্রে দারুণ কাজে আসে। ঘরোয়া এ সহজ পদ্ধতিগুলিকে কাজে লাগিয়ে পাইলসের একাধিক লক্ষণকে নিমেষে কাবু করা যায়।

তাই আপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে এ ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে একটু কাজে লাগিয়ে দেখুন, উপকার পাবেন!

এবার চলুন জেনে নেয়া যাক পাইলসের ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি:

বরফ: পাইলসের যন্ত্রণা কমানোর পাশাপাশি রক্তপাত বন্ধ করতে বরফের কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে একটা কাপড়ে কয়েকটা বরফের টুকরো নিয়ে ক্ষতস্থানে কম করে ১০ মিনিট লাগান। দিনে কয়েকবার এমনটা করলেই দেখবেন পাইলসের সমস্যা একেবারে কমে যাবে।

অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ রয়েছে। এটি পাইলসের যন্ত্রণা কমাতে দারুন কাজে আসে। অল্প করে অ্যালোভেরা জেল নিয়ে ক্ষত স্থানে ধিরে ধিরে লাগিয়ে নিন। অল্প সময় রাখলেই দেখবেন জ্বালা একেবারে কমে যাবে।

লেবুর রস: এই ফলের রসে বেশ কিছু উপাদান রয়েছে যা ব্লাড ভেসেলের দেয়ালকে পোক্ত করে এবং পাইলের কষ্ট কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রথমে একটা লেবু থেকে রস সংগ্রহ করুন। এরপর এতে তুলা চুবিয়ে পাইলসের ওপরে লাগান। এমনটা যখনই করবেন, তখন একটু জ্বালা হবে ঠিকই। তবে কিছু সময় পরে দেখবেন যন্ত্রণা একেবারে কমে যাবে।

এছাড়া এক গ্লাস গরম দুধে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করলেও দারুন উপকার পাওয়া যায়। পাইলসের যন্ত্রণা কমাতে দিনে ৩ বার এ পানীয় খেতে পারেন।

বাদাম তেল: একটা বাটিতে অল্প করে বাদাম তেল নিয়ে তাতে তুলা ডুবিয়ে পাইলসের ওপর লাগালেও উপকার পাওয়া যায়।

অলিভ অয়েল: প্রতিদিন এক চামচ করে অলিভ অয়েল খেলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। এতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ব্লাড ভেসেলের ইলাসট্রিসিটি বাড়িয়ে দেয়। ফলে পাইলসের জ্বালা এবং কষ্ট কমাতে শুরু করে।

এছাড়া ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন: দানা শস্য, বাদাম, শাকসবজি, ব্রাউন রাইস প্রভৃতি খাবার বেশি করে খেতে হবে। কারণ পাইলস সারাতে ফাইবারের কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। আসলে এ প্রাকৃতিক উপাদানটি কনস্টিপেশন এবং ওই জাতীয় প্রায় সব ধরনের রোগের প্রকোপ কমায়। ফলে বারে বারে পাইলসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ২ নভেম্বর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে

Scroll to Top