বর্তমানে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের তুলনায় অনেক বেড়েছে। ২০ থেকে শুরু করে ৪০ এর বেশি, সব বয়সীরাই হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
অনিয়মিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে শীত এলেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের যোগসূত্র কোথায়?
শীতে রোগব্যাধি বেড়ে যায়। এ সময় জ্বর-সর্দি-কাশি যেমন বাড়ে, তেমনই বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও। যদিও এ বিষেয়ে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। তবে অনেক বিশেষজ্ঞরাই ধারণা করেন, হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন প্রভাব ফেলে হৃদ্যন্ত্রের উপর।
বহু সমীক্ষায় দেখা গেছে শীতে হার্ট অ্যাটাক ছাড়াও হার্টের অন্যান্য সমস্যাসহ স্ট্রোকেও আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। এর কারণ হলো শীতে আমাদের শরীরে স্নায়ুব্যবস্থার ‘সিমপ্যাথেটিক অ্যাক্টিভেশন’ বেড়ে যায়। তাই রক্তনালী সঙ্কুচিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। একে বলে ‘ভ্যাসোকনস্ট্রিকশন’।
এমনটি ঘটলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই পুরো শরীরে রক্ত সরবারহ করতে হৃদযন্ত্র দ্বিগুণ গতিতে কাজ করে। বাইরের তাপমাত্রা অনেকটা কমলে, শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে অসুবিধা হয়।
তাতে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে যাকে হৃদ্যন্ত্রের রক্তনালির ক্ষতি হয়। যাদের এমনিতেই হৃদরোগ আছে, তাদের শরীর এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খায়। শীতে আবার শরীরের অক্সিজেনের প্রয়োজন বেড়়ে যায়।
অন্যদিকে ভ্যাসোকনস্ট্রিকশনের জন্য এমনিতেই রক্তনালী সরু হয়ে যায়। তাই হৃদযন্ত্রে কম অক্সিজেন পৌঁছায়। এতেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
শীতে আরও কয়েকটি কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। যেমন- ঠান্ডা পড়লে সবাই ঘরেই বেশি থাকেন। এ সময় হাঁটাচলা বা শরীরচর্চা করার ইচ্ছা কমে যায়।
তার উপর খাদ্যাভ্যাসেও বদল আসে। এমন খাবার খাওয়া বেশি হয়ে যায় যা শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাস্থ্যের উপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয় নানা দিক থেকেই।
তাই শীতে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে পর্যাপ্ত শীতের কাপড় পরুন। শরীর যেন গরম থাকে তা নিশ্চিত করুন। হৃদরোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খান।
পাশাপাশি খাওয়া দাওয়ার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে। শারীরচর্চা করতে ভুলবেন না। হার্ট অ্যাটাকের যে কোনো লক্ষণ যদি টের পান তাহলে দেরি না করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন।