ভাত খেয়েও কি ওজন কমানো যায়?

শরীরের বাড়তি ওজন বড় বিপদের কারণ। এর ফলেই পিছু নেয় ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, হাই প্রেশারসহ জটিল রোগ। তাই বিশেষজ্ঞরা সব সময়ই দেহের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

বিশেষজ্ঞদের এই বাণী শোনার পর অনেকেই ওজন কমানোর মিশনে নেমে পড়েন। এমনকি অনেকে ডায়েট থেকে ভাত সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দেন। তাদের মতে, নিয়মিত ভাত খাওয়াই ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। ভাত খেলে ফ্যাটের বহর বাড়ে।

এখন মূল প্রশ্ন হলো, ওজন কমানোর জন্য আদৌ কি ভাতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানো উচিত? নাকি ডায়েটে ভাত রেখেও ওজন ঝরানো সম্ভব? এ ব্যাপারে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? চলুন সঠিকটা জেনে নেওয়া যাক। তাতেই স্বাস্থ্যের মঙ্গল।

ভাতই শক্তির উৎস

বিশেষজ্ঞদের কথায়, ভাত হলো বাঙালিদের মূল কার্ব সোর্স, যার মাধ্যমে আমরা দৈনিক শক্তির চাহিদা পূরণ করতে পারি। এতে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ। তাই ভাতকে শরীরের শত্রু ভাবার কোনো কারণ নেই।

বরং একটু হিসাব কষে চললে সবাই-ই ভাত খেতে পারেন। এমনকি ডায়াবেটিস রোগীরাও ভাত খেতে পারবেন। তবে তার আগে একবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিতে ভুলবেন না যেন।

ওজন কমাতে কি ভাত খাওয়া ছাড়তে হবে?​

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওটস-ডালিয়ার মতো কার্ব ফুডের থেকে ভাতের ক্যালোরি ভ্যালু কিছুটা বেশি। তাই অত্যধিক পরিমাণে ভাত খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

তাই বলে ওজন কমানোর ডায়েট থেকে ভাতকে পুরোপুরি বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং আপনার দৈনিক ক্যালোরি চাহিদার উপর ভিত্তি করে অল্প পরিমাণে ভাত প্রতিদিনই খেতে পারেন।

তবে মনে রাখবেন, আপনার ওজন অনুযায়ী ঠিক কতটা ভাত পাতে রাখা উচিত, এই হিসাবটি আপনি নিজে করতে পারবেন না। তাই ওয়েট লস ডায়েট চার্ট বানানোর আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

ব্রাউন রাইস চলতে পারে?

সাদা চাল তৈরির সময় শস্যের অনেকটা অংশ নষ্ট হয়। তাই এই চালের ভাত খেলে খুব একটা উপকার মিলবে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এমনকি এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি হওয়ায় সুগার বাড়ারও আশঙ্কা থাকে। সেই তুলনায় ব্রাউন রাইস বেশ উপকারী।

এর কারণ, এই চালে শস্যের ফাইবার অংশ মজুত থাকে। ফলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা তেমন একটা থাকে না বললেই চলে। এমনকি সুগারও থাকে নিয়ন্ত্রণে। তাই পকেটে সইলে ব্রাউন রাইস খেতেই পারেন বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তিনবেলাই ভাত নয়

অনেকেই দিনে তিনবেলাই ভাত খান। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তাতেই শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাদের পরামর্শ, দিনে একবারের বেশি ভাত নয়। বাকি দুইবেলা রুটি, সবজি, ডিম ইত্যাদি খাবার দিয়ে চালিয়ে দিন।

এই কাজটা করলেই উপকার পাবেন। এমনকি দ্রুত কমবে ওজন।

সঙ্গে শরীরচর্চা আবশ্যক

শুধু খাবার নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমানো যায় না। বরং প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করাও জরুরি।

এক্ষেত্রে জিমে গিয়ে বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ঘাম ঝরাতে পারেন। তা না চাইলে দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, হাঁটা, সাইকেল চালানোর মতো এরোবিক এক্সারসাইজের সাহায্য নিতেই পারেন। এতেই কিন্তু উপকার মিলবে হাতেনাতে। দ্রুত ঝরবে বাড়তি মেদ।

 

Scroll to Top