প্রসব-পরবর্তী বিষন্নতায় মায়ের আবেগে পরিবর্তন

সংগৃহীত

প্রসব-পরবর্তী বিষন্নতা নামে পরিচিত একটি মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা নতুন মায়েদের প্রভাবিত করে কিন্তু সাধারণ বিষন্নতার মতো গুরুতর নয়। এই অবস্থায়, আচরণগত, রাসায়নিক এবং আবেগগত অনেক পরিবর্তন ঘটে। ডিএসএম-৫ অনুযায়ী এটি একটি মানসিক ব্যাধি এবং এটি জন্ম দেওয়ার চার সপ্তাহ পরে প্রকাশ পায়। তবে এর কোনো সময়সীমা নেই।

পরিবর্তে, এটি বিষন্নতায় কতটা গুরুতর তার উপর ভিত্তি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, যে প্রায় ১০ শতাংশ নারী গর্ভাবস্থায় এবং ১৩ শতাংশ নারী সন্তান জন্মের পর বিষন্নতা ভোগে।

উপসর্গ:

* বেশির ভাগ সময়ই বিষণ্ন্ন থাকা, সহজেই বিরক্ত হওয়া, অতিসংবেদনশীলতা।

* সবকিছুু অতিরিক্ত মনে হওয়া, হতাশ লাগা, নিরাশ লাগা।

* দুঃখ, অসহায় বা অপরাধবোধের মতো নেতিবাচক অনুভূূতি। নিজেকে খারাপ মা মনে করা।

* অবসাদগ্রস্ততা ও দুর্বল লাগা।

* ঘন ঘন আবেগের পরিবর্তন।

* কান্না বা কান্নার ভাব হওয়া বা কোনো কারণ ছাড়াই কান্না পাওয়া।

* মনসংযোগের অভাব, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা।

* পছন্দের কাজগুলো অপছন্দ হতে থাকা।

* দুশ্চিন্তা করা, রেগে যাওয়া।

* স্মৃতিশক্তির সমস্যা।

* ঘুমের সমস্যা বা বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া। ভেঙে গেলে ঘুম না আসতে চাওয়া।

* খাবারে অনীহা বা অতিরিক্ত খাওয়া।

* মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা, পেশিতে ব্যথা, পিঠ ব্যথা ইত্যাদি।

* যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যাওয়া।

* কাউকে আঘাত করতে ইচ্ছা করা, এমনকি নিজেকে বা নবজাতক শিশুকেও আঘাত করতে ইচ্ছা করা।

* বাচ্চাকে বিরক্ত লাগা।

* নিজেকে অপদার্থ বা অকেজো বলে মনে হওয়া।

* পরিবার ও বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বা পালাতে চাওয়া।

* মৃত্যুর চিন্তা এমনকি আত্মহত্যার চিন্তা আসা।

কখন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন?

* যদি দুই সপ্তাহের বেশি উপসর্গগুলো থাকে।

* স্বাভাবিক কাজকর্মগুলো করতে না পারলে।

* দৈনন্দিন কাজ বা ঘটনার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারলে।

* অতিমাত্রায় উদ্বেগ বা আতঙ্কগ্রস্ত থাকলে।

* সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—নিজের বা বাচ্চার ক্ষতি করতে ইচ্ছা করলে বা সহিংস হয়ে উঠলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।