খাবারের জন্য গ্রীষ্মকালীন রেসিপি

সংগৃহীত

গরমে শরীরস্বাস্থ্যের দিকে নজর দিয়ে ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করা খুবই গুরত্বপূর্ণ এবং সেইজন্য রান্নাও হওয়া দরকার হালকা।

হালকা রান্নার কথা ভাবলেই প্রথমে মনে আসে ঝোলের নাম। আলু, পটল, ঝিঙে সহযোগে মাছের ঝোল। বানানোর পদ্ধতিও খুবই সহজ। সব সবজি লম্বা করে কাটুন আর মাছটা আগে ভেজে তুলে রাখুন। ওই তেলেই গোটা জিরে বা কালোজিরে ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে সবজিগুলো যোগ করার পর সামান্য ভাজাভাজি করে তাতে চেরা কাঁচালঙ্কা ও আদাবাটা দিয়ে আরো কিছুক্ষণ নাড়ুন। তারপর টম্যাটো যোগ করুন। আগে থাকতে একটি ছোটো বাটিতে হলুদগুঁড়ো, জিরেগুঁড়ো ও ধনেগুঁড়ো নিয়ে মশলার একটি মিশ্রণ তৈরি রাখবেন। টম্যাটো কষা হয়ে গেলে ওই মিশ্রণটি যোগ করে আরো কিছুক্ষণ কষান। তারপর তার মধ্যে পরিমাণমতো জল ও স্বাদমতো নুন যোগ করে কড়াইটা চাপা দিয়ে ফুটতে দিন। নামানোর কিছুক্ষণ আগে ভেজে রাখা মাছগুলি দিয়ে দেবেন। গরম গরম ভাত, মাছের ঝোল ও সাথে এক টুকরো পাতিলেবু, অতি উপাদেয়!

দ্বিতীয়টি বলবো ডাল, মুগ বা মুসুর। এটি বানানোর পদ্ধতি তো সকলেরই জানা। মুগডালের মধ্যে এমনি যেমন ভাবে ডাল বানিয়ে থাকেন তেমনটাই বানাতে পারেন। সবজি ডালও খুব ভালো লাগে। তবে গরমকালে সবরকম সবজি পাওয়াটাই দুষ্কর, যেমন ধরুন গাজর, বিনস, কড়াইশুঁটি। আরেকটি হয় আলু পটলের ডাল। অনেকেই হয়তো জানেন না এটির কথা। হাসাহাসি করতেই পারেন যেহেতু আলু পটল দিয়ে সাধারণত ঝোলই হয়ে থাকে জানি। কিন্তু একদিন বানিয়ে দেখবেন, খারাপ লাগবে না খেতে। শেষে একটু ঘি যোগ করবেন। মাঝারি আলু চার টুকরো আর পটলগুলি আড়াআড়ি দু’টুকরো করে রান্নাটি করতে হবে। মুসুর ডালের প্রসঙ্গে বলবো পেঁয়াজ ফোড়ন বা রাঁধুনি ফোড়ন দিয়ে বানাতে পারেন পাতলা করে। আরেকটির কথা না বললে গর্হিত অপরাধ হবে যেটি হলো কাঁচা আম দিয়ে টক ডাল, গরমকালের প্রধান আকর্ষণ।

এসময়ের অন্যতম পদ নানারকম সবজি সহযোগে চিকেনের পাতলা ঝোল। সবজির মধ্যে আলু, পেঁপে, গাজর, বিনস দিতে পারেন। গাজর, বিনস পাওয়া না গেলে আলু আর পেঁপে দিয়েই করবেন। গুঁড়োলঙ্কার পরিবর্তে কাঁচালঙ্কা দিয়ে রান্নাটি করবেন। মশলার মধ্যে হলুদগুঁড়ো, জিরেগুঁড়ো, ধনেগুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো ব্যবহার করবেন। রান্নাটি লালচে রঙের না হলেও খেতে কিন্তু অসাধারণ হবে।

নিরামিষ রান্নার মধ্যে আলু পটলের ডালনা, আলু পটল পোস্ত, আলু ঝিঙে পোস্ত, সজনে ডাঁটা দিয়ে আলু পোস্ত, আলু দিয়ে সয়াবিনের নিরামিষ তরকারি এরকম অনেক ধরণের রান্নাই আছে করার মতো।

শরীরকে শীতল রাখার জন্য পানীয় হিসাবে লেবুর শরবত, আমপোড়া শরবত, লস্যির উল্লেখ করবো। তবে চিনির পরিমাণ অবশ্যই কম করে নেবেন। এছাড়াও মধ্যাহ্নভোজের সময় অন্যান্য খাবারের সাথে টক দইও রাখতে পারেন। সঙ্গে স্যালাড রাখলে তো আরোই ভালো হয়। ফলের মধ্যে তরমুজ খেতে পারেন। উপরে একটু চাট মশলা ছড়িয়ে নেবেন, দেখবেন আরও বেশি সুস্বাদু লাগছে। যদিও এগুলি প্রকৃত অর্থে কোনো রান্না নয় তাও গরমে শরীরকে সুস্থ রাখতে এগুলির কোনো বিকল্প নেই। আর এরকম সময়ে যতটা পারবেন কম তেল মশলা সহযোগে রান্না করার চেষ্টা করবেন। প্রচুর জল পান করবেন। সাথে বই পড়ুন, গান শুনুন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমোন। শরীরের সাথে সাথে মনও ভালো থাকবে।