উচ্চ রক্তচাপকে তেমন গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঘটনা দিনদিন বাড়ছে। এসব এড়ানো কিন্তু কঠিন নয়।
ওষুধ ছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কীভাবে? দেখুন …
রেডিমেড খাবার এড়িয়ে চলুন
রান্নার সময় বাঁচানো, আধুনিকতা বা স্বাদ পরিবর্তন- যে কারণেই হোক না কেন, তৈরি খাবারের প্রতি আজকাল অনেকরই ভীষণ আগ্রহ। অথচ রেডিমেড খাবারে থাকে প্রচুর লবণ, যা রক্তের চাপ বাড়ায়। এ কারণে শুধু হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক নয়, কিডনি কিংবা ডিমেনশিয়ার মতো রোগও হতে পারে। তাই ঘরের রান্না খাওয়াই শ্রেয়।
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পটাসিয়ামযুক্ত খাবার
অনেকে ধরেই নেন যে, উচ্চ রক্তচাপ হলেই ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। তা সব সময় সত্য নয়। আলু, মিষ্টি আলু, কলা মটরশুঁটি, কিসমিস, আলুবোখারা, টমেটো ইত্যাদি পটাসিয়ামযুক্ত খাবার খেলে রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের নর্থওয়েষ্টটার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষা থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
কোকোযুক্ত কালো চকলেট
চকলেটপ্রেমীরা কোকোযুক্ত কালো চকলেট খেতে পারেন, তবে চকলেটে কোকোর পরিমাণ কমপক্ষে শতকরা ৭০ ভাগ থাকা উচিত। তবে হ্যাঁ, চকলেট কিন্তু দুটোর বেশি নয়! এতে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ, অতিরিক্ত ওজন ধমনীর রক্তের চাপ বাড়ার বড় কারণ। এই তথ্য পাওয়া গেছে জার্মনির কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ে করা এক গবেষণা থেকে ।
জবাফুলের চা
দিনে দুই থেকে তিন লিটার পানি নিয়মিত পান করলেও কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ কমে, বিশেষ করে প্লেন পানি ও ভেষজ চা। জানান জার্মানির এর প্রধান ডা. মার্টিন।
লাল বিটের রস ও ভেষজ চা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
ভেষজ চায়ের উদ্ভিজ্জ পদার্থ, ফেনোলিক এসিড রক্তচাপ কমিয়ে আনতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। বোস্টনের টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়ে করা এক সমীক্ষায় পাওয়া গেছে এই তথ্য। আরো জানানো হয়, ট্যাবলেট ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর লাল বিটের রস বা জুস।
শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট কম, সয়াবিন বেশি
ভাত, নুডলস বা এ ধরনের শর্করা জাতীয় খাবারের পরিবর্তে বেশি করে সয়াবিন খাওয়া উচিত। খাওয়া যেতে পারে টোফু বা দুধের জিনিস। আমেরিকার স্বাস্থ্যবিষয়ক ম্যাগাজিন \’সার্কুলেশন\’ জানাচ্ছে এই তথ্য।
স্ট্রেসকে \’না\’ বলুন
মানসিক চাপের কারণে শরীরে পেশীগুলোতেও চাপের সৃষ্টি হয়। এর ফলে রক্তের চাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। তাই দিনে অন্তত দুইবার পাঁচ মিনিট করে যেকোনো ধরনের হালকা ব্যায়াম, ইয়োগা বা মেডিটেশন এবং হাঁটাহাঁটি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
পছন্দের মিউজিক শুনুন
ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, পছন্দের গান, বিশেষ করে উচ্চাঙ্গ সংগীত বা বা হালকা কোনো মিউজিক উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তা ছাড়া নিজে গান গাইতেও পারেন। সবচেয়ে বড় কথা, মিউজিকটি হতে হবে নিজের পছন্দের। তবেই কেবল সুফল পাওয়া সম্ভব।
নাক ডাকা রক্তচাপ বাড়ায়
জার্মানিতে প্রতি চারজনের একজন নারী এবং প্রতি দুজনের মধ্যে একজন পুরুষ রাতে ঘুমের সময় নাক ডাকে। নাক ডাকার সময় অক্সিজেন আসা যাওয়া বাধাগ্রস্ত হলে স্ট্রেস হরমোন নির্গমন বেশি হয়। এর ফলে ধমনীতে রক্তের চাপ বেড়ে যায়। কারো নাক ডাকার সমস্যা থাকলে তা অবহেলা না করে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।
সূত্র : ডিডাব্লিউ