আমরা ভীষণ খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। চারপাশের বাতাসে ক্ষতিকারক সব পদার্থ মিশে রয়েছে। এই বাতাসে প্রতিনিয়ত শ্বাস নিয়ে বারোটা বাজছে ফুসফুসের। আর কমছে আয়ু। তবে শুধু বাতাসের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের নিজেদেরও কিছু বদ অভ্যাসও রয়েছে। এই যেমন ধরুন ধূমপান। ধূমপান করার মাধ্যমে ফুসফুসের পাশাপাশি গোটা শরীরেরও ক্ষতি হয়।
ফুসফুসের স্বাস্থ্য বিগড়ে গেলে নানাবিধ জটিলতা তৈরি হয়। হতে পারে সিওপিডি, অ্যাজমার মতো ক্রনিক রোগ। তখন শ্বাসকষ্ট নিত্যদিনের সঙ্গী হতে পারে। তাই ফুসফুসকে বাঁচানোর পথ খুঁজতে হবে। হাতের কাছে থাকা কয়েকটি পানীয়ই সমস্যা কমাতে পারে। ফুসফুস থেকে বের করতে পারে ক্ষতিকর সব পদার্থ।
মুলেঠি চা
প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে মুলেঠি ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে এমন কিছু ঔষধিগুণ রয়েছে, যা বহু জটিলতা থেকে মানুষকে সুস্থ করে দেয়। এমনকি ফুসফুসের খেয়াল রাখার কাজেও এর জুড়ি মেলা ভার। তাই চেষ্টা করুন মুলেঠি দিয়ে চা তৈরি করে খাওয়ার। এই চা সকাল-বিকাল দুইবার খেয়ে নিতে পারলেই দেখবেন শ্বাসের সমস্যা দূর হয়ে গেছে। আপনি প্রাণ খুলে প্রকৃতির মাঝে শ্বাস নিতে পারছেন।
লেবু, আদা চা
লেবুর মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি। এই ভিটামিন শরীর সুস্থ রাখার কাজে অত্যন্ত কার্যকরী। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কয়েকগুণ বাড়ায়। অপরদিকে আদায় রয়েছে প্রদাহনাশক ক্ষমতা। এতে জিজ্ঞেরল নামক একটি উপাদান আছে। এই উপাদান ফুসফুসের নানা সমস্যায় অত্যন্ত কার্যকরী। এমনকি সাধারণ ঠান্ডা লাগার অসুখকেও দূর করে এই চা। তাই নিয়মিত লেবু-আদা দিয়ে চা পান করুন।
হলুদ ও আদার মিশ্রণ
আমাদের রান্নাঘরে মজুত থাকা হলুদ কিন্তু অত্যন্ত উপকারী মশলা। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ক্যানসারাস উপাদান। এমনকি হলুদ ফুসফুস থেকে টক্সিন বের করে দিতে পারে। হলুদের সঙ্গে সামান্য পরিমাণে আদা মিশিয়ে পানীয় তৈরি করলে তার গুণ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। এমনকী ফুসফুস পরিষ্কার হয়। সিওপিডি, অ্যাজমার প্রকোপ কমে। এই রোগে আক্রান্তরা কিছুটা হলেও সুস্থ থাকতে পারেন। তবে ভুলেও নিজের ওষুধ খাওয়া ছাড়বেন না।
মধু ও গরম পানি
মধুর গুণ নিয়ে একটা গোটা প্রতিবেদন লেখা যায়। এতে রয়েছে কিছু বিশেষ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহ থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়, ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া দূষণের ফলে ফুসফুসে যেই ময়লা প্রবেশ করে তাও বের করে দিতে পারে মধু। তাই আপনাকে গরম পানিতে কিছুটা পরিমাণে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এতেই ফুসফুস সুস্থ থাকবে। তবে ডায়াবেটিস থাকলে মধু খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
আপেল, গাজর ও বিটরুটের স্মুদি
এই তিন ফল ও সবজি মিলিয়ে মিশিয়ে তৈরি করে ফেলুন স্মুদি। এই স্মুদি খেলে ফুসফুস ডিটক্সিফাই হয়। অর্থাৎ ফুসফুস থেকে ময়লা বেরিয়ে যায়। তাই হাতে সময় সুযোগ পেলেই স্মুদি বানানোর চেষ্টা করুন। প্রতিদিন এক কাপ করে খেলেও উপকার পাবেন।