পবিত্র মাস রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার

রমজান হল ইসলামী বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে নবম মাস, যে মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলিমগণ রোজা পালন করে থাকে। রমজান মাসে রোজাপালন ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়তম। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এসময় খাবার-দাবার, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের রমজানে বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। কারণ সুগার লেভেল কমা বা বাড়ার ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য কিছু বিষয় ডায়াবেটিস রোগীদের মেনে চলা উচিত।

সুগার লেভেল হ্রাস বা বৃদ্ধি
রক্তে সুগার লেভেল কমার অনেক লক্ষণ রয়েছে, যেমন অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, ঠাণ্ডা লাগা, খিদে পাওয়া, ঝাপসা দেখা, দ্রুত হার্টবিট এবং মাথা ঘোরা। আর সুগার লেভেল বৃদ্ধি হলে রোগীর ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায় ও ঘন ঘন প্রস্রাব হতে থাকে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, ডায়াবেটিস রোগীদের রমজান মাসে প্রটিন এবং ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।

সেহরির খাবার
ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সাহরিতে এমন খাবার খান, যেগুলো একটু দেরিতে হজম হয়। সাহরিতে কম তেল দিয়ে তৈরি পরোটা খেতে পারেন। দেরিতে হজম হয় এমন খাবারর মধ্যে হালিমও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। হালিমে মাংস এবং ডাল থাকার কারণে ফাইবার প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, যার ফলস্বরূপ দীর্ঘক্ষণ খিদে পায় না। পেট ভর্তি থাকে। অতিরিক্ত তেল-মশলা-ভাজা জাতীয় খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। সাহরিতে কাস্টার্ড বা কোনো ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না।

ইফতারের খাবার
ডায়াবেটিস রোগীরা তাদের রোজা খেজুর দিয়ে খুলতে পারেন। খেজুর দিয়ে রোজা খোলা যেমন স্বাস্থ্যসম্মত তেমনি সুন্নত। একটি খেজুরে ছয় গ্রাম কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। এছাড়াও খেজুরে মিনারেলস, ফাইবার, ফসফরাস এবং পটাশিয়ামও রয়েছে। পটাশিয়াম ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

ইফতারের সময় ফলের সাথে বাড়তি চিনি বা ক্রিম মিশিয়ে না খাওয়া ভালো। সামান্য লেবুর রসও ফলের সাথে দেওয়া যেতে পারে। তেল, লবণ, লাল মরিচের ‍গুঁড়ো এবং চিনিযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া এড়ানো উচিত। রমজানের সময় আপনার খাবার তালিকায় ফল, শাকসবজি, ডাল, দই রাখুন। ডিহাইড্রেশন দূর করতে, সুগার ফ্রি পানীয় বা যতটা সম্ভব বেশি পরিমাণে পানি পান করুন।

ব্লাড প্রেশার ও সুগার চেক করুন
আপনি যদি সুগারের রোগী হন, তবে সময়মতো আপনার ব্লাড প্রেশার চেক করুন। ১৪-১৫ ঘণ্টা রোজার প্রভাব ব্লাড লেভেলের ওপর পড়ে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তচাপ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

সময়মতো সুগার চেক করাও জরুরি। সুগার লেভেল বৃদ্ধি বা হ্রাস-এর পরিস্থিতি অনুযায়ী আপনার ডায়েটে এমন খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখবে।

Scroll to Top