মহামারী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে ৯১ লাখ ৯২ হাজার ৫৪৪ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৪৪ জন। বিশ্বজুড়ে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে এই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনও সফল ও কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান। এই পরিস্থিতিতে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে কীভাবে এই ভাইরাস ছড়ায় তা চিহ্নিত করা এবং তা থেকে বেঁচে থাকা।
শাক-সবজি ও মাছ-মাংস মানুষের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদার অন্যতম। আসুন জেনে নেওয়া যাক বাজারে থেকে কিনে আনা ফলমূল শাক-সবজি ও মাছ-মাংস কীভাবে করোনামুক্ত করা যায়। ইন্টারনেটের এই যুগে অনলাইন প্লাটফর্মে এ সংক্রান্ত নানা তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু কোনটা সঠিক ও নির্ভরযোগ্য প্রক্রিয়া তা বেছে নেওয়া খুবই কঠিন।
এসব বিষয় বিবেচনা করে হার্বাল হেলথ, এফটিএ, সিডিসি এবং এফএসএ-এর পরামর্শের আলোকে নির্ভরযোগ্য তথ্য তুলে ধরেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসনিম যারা, যিনি করোনার শুরু থেকেই যুক্তরাজ্যে সামনের সারিতে থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
যেভাবে ফল-মূল ও শাক-সবজি করোনামুক্ত করবেন
শাক-সবজি বা ফল-মূলের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায় এমন কোনও বিশেষ প্রমাণ এখনও মেলেনি। তবে এটি অসম্ভবও নয়।
বিশ্বস্ত সংস্থাগুলোর মতে, এই ধরনের তাজা খাবার যেমন: শাক-সবজি ও ফল-মূল চলন্ত পানির নিচে অর্থাৎ কল ছেড়ে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে একটু সময় নিয়ে কচলিয়ে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
অনেকের কাছে হয়তো শুনে থাকবেন পানিতে ভিজিয়ে রাখার কথা। তবে সেক্ষেত্রেও কচলিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। শুধু ভিজিয়ে রাখলে কিছু কিছু জায়গায় জীবাণু থেকে যেতে পারে। তাই কচলিয়ে ধোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আর মাছ-মাংসের ক্ষেত্রে ইউরোপ আমেরিকার সংস্থাগুলো বলছে না ধুয়ে রান্না করতে। মাংস একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপ দিয়ে রান্না করলে তাতে জীবাণু বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। তবে এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমাদের দেশে যে উপায়ে বা যে পরিবেশে মাংস বিক্রি হয় তাতে না ধুয়ে খাওয়াটা সমীচিন হবে না।
তাই মাংস ধোয়ার ক্ষেত্রে যে সাবধনতা অবলম্বন করতে হবে সেটা হচ্ছে, আশেপাশে যেন ফল-মূল, শাক-সবজি বা সেগুলো কাটার যন্ত্রপাতি কিংবা সেগুলোর থালা-বাসন না থাকে। এগুলো আশেপাশে রাখলে জীবাণু ছিটে সেখানে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আর সব ধরনের সবজি আমরা অনেক বেশি তাপ দিয়ে রান্না করে খাই না। মাঝে মাঝে কিছু কিছু সবজি সালাদে খাওয়া হয়। তাছাড়া ফল-মূল বেশির ভাগ কাচা খাওয়া হয়। তাই তাতে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থেকে যায়।
আর খেয়াল রাখতে হবে মাংস ধোয়ার সময় শরীরে যেন পানি ছিটে না যায়। আর পানি ছিটে গেলেও পরে তা সাবান দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
এছাড়া, মাংস কাটার জন্য যে বটি, চাকু বা কাটিং বোর্ড ইত্যাদি ব্যবহার করবেন তা শাক-সবজি কাটার জন্য ব্যবহার করবে না। এগুলোর জন্য আলাদা বটি-চাকু ব্যবহার করুন। আর তা সম্ভব না হলে এক প্রকার খাবার কাটার পর অন্য প্রকার খাবার কাটার আগে গরম পানি ও সাবান দিয়ে সেগুলো ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।