করোনা ঝুঁকি রোধে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ

করোনা বর্তমানে এক আতঙ্কের নাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য জরুরি অবস্থা জারি করছে। বিশ্বে করোনার প্রভাব পূর্ববর্তী যেকোনো ভাইরাসের বা মহামারির চেয়ে বেশি ক্ষতিকর এবং মানুষের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।

কোভিড–১৯–এর কারণে সারা বিশ্বে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। করোনা এখন বৈশ্বিক সমস্যা। করোনার বিস্তার রোধে আমাদের কিছু বিষয় খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে চলা উচিত। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে সহজে শুধু করোনাই নয় যে কোনও ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। তাই করোনা প্রতিরোধে খেতে হবে এমন কিছু খাবার যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। যেহেতু এই ভাইরাসের এখনও কোনও টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি, তা প্রতিরোধে এখন আপনার আমার একটু সচেতনতাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সুষম খাবার জরুরি। খাবার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে তৈলাক্ত খাবার ও লবণযুক্ত ফাস্ট ফুড। সুস্থ থাকতে হলে খাবার তালিকায় ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবার রাখার পরামর্শ পুষ্টিবিদদের।

বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার মহুয়া বলেন, আমাদের মতো জনবহুল ও অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থায় করোনার সংক্রমণ মোকাবিলা করা বেশ জটিল। তবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে, করোনাসহ যেকোনো ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।

খাবারের মাধ্যমেই আমরা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে থাকি যা আমাদের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। এজন্য বেশি বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন খেতে হবে। ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হজমশক্তি বাড়ে।

যেসকল খাবার গ্রহনে উপকার, আসুন জেনে নিই সেই সম্পর্কে-

শাকঃ পালংশাক, কচু শাকসহ অন্যান্য সবুজ শাক।

টক দই, সিম বিচি মটরশুঁটি, বার্লি, ওটস, লাল চাল-আটা ও বাদাম এসকল খাবারগুলো বেশ কার্যকর।

সবজিঃ লেবু, করল্লা বেটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ, বিট,ব্রোকলি, গাজর,টমেটো, মিষ্টিআলু, ক্যাপসিকাম, ফুলকপি।

মসলাঃ আদা, রসুন, হলুদ, দারুচিনি, গোলমরিচ।

ফলঃ কমলালেবু, পেঁপে, আঙুর, আম, কিউই, আনার, তরমুজ, বেরি, জলপাই, আনারস।

চাঃ গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।

ভাইরাসের সংক্রমণ মোকা‍বিলায় খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বিশ্রাম, জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকাও জরুরি। এবং আরও যে সকল খাবার খেতে হবে এবং বর্জন করতে হবে তা হল-

১. অতিরিক্ত চিনি ও লবণ মেশানো খাবার খাবেন না। বাদ দিন প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার। জাঙ্ক ফুড ও তেলে ভাজা খাবার তো একেবারেই খাওয়া যাবে না।

২. ঘি ও মধু খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

৩. ডাল, দানা শস্যজাতীয় খাবার, রাজমা যেমন উপকার করবে, তেমনই পাতে রাখুন বেশি সিদ্ধ করা মাংস, মাছ ও ডিম।

৪. হাফ বয়েল ডিম পোচ ও অমলেট খেতে পারেন।

৫. লবণ ছাড়া বাদাম, আমন্ড ও ছোলা খান।

৬. সজনে ডাঁটা ও সজনে ফুল যে কোনও ভাইরাস ঠেকাতে সক্ষম।

৭. টকদই, সবুজ শাকসবজি ও ফলে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এসব খাবার খেতে পারেন।

৮. লাল বাদামি ও কালো চালের ভাত খেতে পারেন।

৯. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।

১০. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ভিটামিন সি ফ্রি রেডিকেলের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে ডিএনএর ক্ষতি রোধ করে। এ ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। স্টবেরি, ব্রকলি, লেবুসহ সব ধরনের সাইট্রাস জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

Scroll to Top