‘ফুল ফুটুক আর নাই বা ফুটুক আজ বসন্ত’

‘আহা আজি এ বসন্তে, এতো ফুল ফুল ফুটে, এতো বাঁশি বাজে, এতো পাখি গায়, আজি এ বসন্তে’। জাতীয় কবি কাজি নজরুল ইসলামের এই বিখ্যাত গানটি মনে করিয়ে দেয় বসন্তের আগমনি বার্তা। ডিজিটাল যুগেও বসন্তকে নিয়ে রয়েছে গান, কবিতা। ‘বসন্ত আসিল মনে, ফুলেরা ফুটিল বনে, পাখিদের গুঞ্জরণে মাতাল সম্মিলন, বল কার লাগিয়া পড়াও তুমি সাধের বিন্দাবন’। গানগুলো শুনলেই মনে দোলা দেয়। বসন্তের আগমনে সেই কালজয়ী গানগুলো এখন আকাশে বাতাসে দোলা দিচ্ছে। সবার মনের কথা ‘ফুল ফুটুক আর নাই বা ফুটুক আজ বসন্ত’।

ক্যালেন্ডারের পাতা ঘুরতে ঘুরতে এসেছে ফাল্গুন মাস। আর ফাল্গুন মাস এনে দিয়েছে ঋতুরাজ বসন্তকে। কদিন আগেও শীতের দাপটে  কাঁপছিলো সারা দেশ। বসন্তের আগমে বাংলার প্রকৃতিতে এসেছে ফাগুনের ছোঁয়া। ঝলমলে রোদের দেখাও মিলছে, বইছে ফালগুনী হাওয়া। ধূসর কুয়াশা সরে গিয়ে বাগানজুড়ে খেলা করছে সোনারোদ। আর ঋতুরাজের রাজসভায় আগমন ঘটেছে রঙিন সব ফুলের। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সবাই সাদরে বরণ করবে ঋতুরাজ বসন্তকে। সেই খুশিতে গাছের শাখে শাখে ফুটছে হরেক রকম ফুল। ফুলের বাগান, বাসা বাড়ি, স্কুল কলেজের আঙিনাসহ বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমসসহ নানান ফুল। আমগাছে এসেছে মুকুল। পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়াসহ ফাগুনের নানান ফুলের কলিরও উকি মারছে। শীতে ঝরে পড়া পাতার ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে গাছে গাছে গজাতে শুরু করেছে নতুন পাতা।  

বসন্তের আগমনে অনেকেই হিসাব কোষছেন জীবনে কতটি বসন্ত পেরিয়ে এলাম। সাথে অনেকেই নতুন বসন্তে পা রাখার আনন্দেও উৎফুল্লো। বসন্তের আনন্দে মাতয়ারা বৃদ্ধ, কিশোর, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতিসহ সবাই। আর বসন্তকে বরণ করে নিতেও চলছে নানা আয়োজন। দিনটি স্মরণ করে রাখতে তরুণ, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতিরা ব্যস্ত। কারণ এইদিনটির জন্য আবার এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।

বিশেষ করে যারা প্রথম বসন্তে পা রাখেছেন তাদের মধ্যে উৎসহ উদ্দিপনাটা অনেক বেশি। ইতিমধ্যে রাজধানীসহ সারাদেশে ফুলের দোকানদাররা নানা রঙে বে রঙের ফুল দিয়ে সাজিয়ে রেখেছেন। বিভিন্ন ধরনের ফুল শোভা পাচ্ছে দোকানগুলোতে। ক্রেতা সমাগমও অনেক বেশি। একদিন আগেই সোমবার বিকেল থেকেই বিভিন্ন বসয়সের মানুষদের ফুলের দোকানে ভীড় করতে দেখা যায়। রাত ১২টা বাজার পর থেকেই শুরু হবে বসন্ত বরণের উৎসব। তাই আগে থেকেই ফুল কিনে রাখছেন সবাই।

বসন্তের একদিন পর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। তাই মানুষের মধ্যে বসন্ত যেমন দোলা দিচ্ছে, তেমনি ভালোবাসা দিবস নিয়ে প্রস্তুতি চলছে। এবার বিশ্ব ভালো বাসা দিবস মুছে দেবে জীবনের পাওয়া, না পাওয়া ও বিরহের সব গ্লানি।

এদিকে পহেলা বসন্তের হাওয়া লেগেছে ফুল আর হলুদিয়া শাড়ির উপর। বিশেষ করে এইদিন গাদা ফুলের চাহিদা থাকে একটি বেশি। যার ফলে গাদা ফুলের দোকানদাররা একেবারে মগডালে উঠে বসে আসেন। একশ টাকায় ফিলছে না ফুলের মালা। মেয়েদের মাথা সাজাতে যে ফুলের প্রয়োজন পড়ছে তার দাম ধরা হচ্ছে ২ থেকে আড়াইশ টাকা।

এছাড়াও গাদা ফলের সাথে বেড়েছে অন্য ফুলের দামও। ৫টাকার রজনীগন্ধা স্টিকের দাম বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫টাকায়। একটি গোলাপের দাম এসে দাঁড়িয়েছে ২০ থেকে ২৫টাকা। তারপরও ভাল মানের গোলাপ পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন এই একটি সময় ফুলের চাহিদা একটু বেশি থাকে। যার ফলে দাম একটু বেশি হয়। এছাড়াও এবার ফুলের আমদানি থেকে চাহিদার বেশি। এরফলে সবধরনের ফুলের দাম একটু চওড়া।

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/বিএনকে

Scroll to Top