দুদকের ভুলে বিনা অপরাধে জাহালমের তিন বছর কারাভোগের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সোমবার (৪ ফ্রেবুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, জাহালম যে ঘটনার শিকার হয়েছে, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এ ঘটনায় জড়িতদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে, বিকেলে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ মোবাইল ফোনে সারাবাংলাকে বলেন, যে যা বলুক তাতে আমাদের কিছুই আসে যায় না। মানুষ বলবে এটাই স্বাভাবিক। জাহালমের ঘটনায় আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি। আর তার এই ঘটনায় আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। জেলা জজ পদমর্যাদার দুদকের একজন পরিচালককে বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, এই ঘটনায় কারা দায়ী, কে দায়ী, ব্যাংক কর্মকর্তা নাকি দুদক কর্মকর্তারা দায়ী কিংবা পুলিশ দায়ী কিনা— এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। আর এ ঘটনায় যারা জড়িত বলে তদন্তে উঠে আসবে, তাদের বিরুদ্ধে কমিশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেদিকে নজর রাখতে কমিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, দুদকের ভুলে তিন বছর কারাভোগের পর রোববার দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুরের কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে মুক্তি পান জাহালম।
এর আগে, সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা দায়ের করে দুদক। কিন্তু দুদকের ভুলে সালেকের বদলে সবক’টি মামলায় আসামি করা হয় জাহালমকে। মামলাগুলোর মধ্যে ২৬টিতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এসব মামলার আসামি হিসেবে ২০১৬ সালে গ্রেফতার করা হয় জাহালমকে। ওই সময় থেকেই কারাগারে রয়েছেন তিনি।
এ ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক ‘স্যার আমি সালেক না, জাহালম’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের নজরে আনেন আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত। এরপর রোববারের (৩ ফেব্রুয়ারি) মধ্যেই জাহালমকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই অনুযায়ী রোববার দিবাগত রাতে মুক্তি পেয়েছেন জাহালম।
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএস