খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করতেই হবে: প্রধানমন্ত্রী

দেশব্যাপী চলমান খাদ্যে ভেজাল বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে ভেজাল প্রতিরোধের জন্য নাগরিক সচেতনতার উপরও জোর দিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্যে ভেজাল দেওয়া এটা আমাদের দেশের কিছু কিছু শ্রেণির মানুষের চরিত্রগত বদ অভ্যাস; আর কিছুই না। এটা বন্ধ করতে হবে। কেননা ভেজাল খাদ্য খেয়ে মানুষের উপকার তো হবে না, অপকারই হবে। যদিও ভেজাল বিরোধী অভিযান চলছে সেটাকে আরো ব্যাপকভাবে করবার জন্য আমরা আলাদাভাবে একটা কর্তৃপক্ষই করে দিয়েছি। হাটে ঘাটে মাঠে যেন এই ভেজালবিরোধী অভিযানটা অব্যাহত থাকে তার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি, ভবিষ্যতে আমরা আরো নেব।

রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ভেজালের বিরুদ্ধে জন সচেতনতার তাগিদ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভেজালের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করে তোলা দরকার। আপনি কেন ভেজাল বিক্রি করবেন? আপনি ভালোটাই বিক্রি করেন? যে দাম পড়বে সেই দাম নেন, একটু বেলি লাভ নিতে চান, লাভ নেন কিন্তু যেটি করবেন ভালোভাবে করেন। খারাপভাবে করে মানুষ ঠকিয়ে মানুষের জীবনকে ধ্বংস করা এটার অধিকার কারো নাই।

আপনারা জানেন আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি সেখানে আমরা সফলতা অর্জন করেছি, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি, দুর্নীতির বিরেুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। ভেজাল দেওয়া এটাও একধরনের দুর্নীতি। কাজেই ভেজালের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, এটাও অব্যাহত থাকবে। কোন বিষক্রিয়ায় আমাদের দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হোক সেটা আমরা চাই না।

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন আমরা ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলাম তখন আমরা দেখেছিলোম খাদ্য নিয়ে গবেষণার তেমন কোন ব্যবস্থাই ছিল না। কোথাও কোন রিসার্চ হচ্ছে না। শুধুমাত্রা ইউনিভার্সিটিগুলোতে একটু রিসার্চ হত। এছাড়া রিসার্চের জন্য কোন স্পেশাল বরাদ্দ ছিলনা, কিছুই ছিলনা। আমরা তাৎক্ষণিক আমাদের সেই সময়কার আর্থিক সঙ্গতির অনুয়ায়ী প্রথমেই ১২কোটি টাকা আমি বরাদ্দ করে দিলাম,শুধু রিসার্চের জন্য। আজকে গবেষণার ফসল দেশের মানুষ পাচ্ছে। গবেষণার মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন ধান,বীজ উদ্ভাবনই করছি না, আমাদের কৃষকদেরকে বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করে আমরা উৎসাহিত করেছি। যার ফলাফলটা আজকে দেশের মানুষ পাচ্ছে। এখন ফসল যেমন উৎপাদন হচ্ছে, মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত হচ্ছে।

দেশের মানুষের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, একগাদা ভাতই শুধু খেতে হবে না , ভাতের সাথে পর্যাপ্ত শাক সবজিও বেশি করে খেতে হবে। আর মাছ, ডিম তো আছে। যাতে খাবারটা সুষম খাদ্য হয়। আর সুষম খাদ্য হলেই পুষ্টির নিশ্চয়তাটা থাকবে। আর নজর দিতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপরে।

অনুষ্ঠানে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। খাদ্যমন্ত্রণালয়ে সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার প্রমুখ।

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিএস  

Scroll to Top