আরবা খাতুন। বয়স ৫০ বছর। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে এসেছেন কয়েক সপ্তাহ হলো। থাকছেন কক্সবাজারের কুতুপালং আশ্রয় ক্যাম্প।
সম্প্রতি তার সঙ্গে কথা বলেন কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরার ক্যাটি আরনল্ড। সাক্ষাৎকারে ওই নারী কেন রাখাইন ছাড়েন আর বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে কেমন আছেন তা উল্লেখ করেন।
আলজাজিরাকে আরবা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ১৫ বছর আগে মারা গেছেন। সন্তান নিয়ে রাখাইনে থাকতাম। সংকটে পড়ার আগে ভালোই ছিলাম। সুন্দর জীবন ছিল আমাদের। গৃহপালিত পশু ছিল, কৃষি জমি ছিল। ছিল নারকেল গাছ। সবকিছু মিলে ভালোই চলছিল।
কোন পরিস্থিতি পড়ে বাংলাদেশে এসেছেন- এমন প্রশ্নে আরবা বলেন, \’আমি ঠিক মনে করতে পারছি না; সেদিন কী বার ছিল। হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। আমি মুখ পরিষ্কার করছিলাম। হঠাৎ শুনি বুটজুতার শব্দ। তারা গুলি ছুঁড়ছিল। একটা গুলি আমার পেটে লাগে। তবে অল্পের জন্য বেঁচে যাই। তারপর তারা আমাদের সহায় সম্বল সব কেড়ে নিল।\’
তিনি জানান, সেনারা চলে গেলে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়।
\’যখন আমরা ফিরলাম তখন দেখলাম সারা গ্রাম পুড়ে ছারখার। ছেলে আমাকে পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তার স্ত্রী ও সন্তানদের দেখতে পাই। আমরা সেখানে তিনরাত ছিলাম। তারপর সে আমাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। সঙ্গে কিছুই আনতে পারিনি। এটা ছিল খুবই কঠিন পথ। বারো দিন লাগে বাংলাদেশে আসতে। আমরা শুনেছিলাম সীমান্তে গণ্ডগোল হচ্ছে; কিন্তু তেমনটার মুখোমুখি হয়নি\’- বলেন আরবা।
তবে বাংলাদেশে এসে খুশি আরবা। কেননা এখানে এসে তিনি নিরাপদ বোধ করছেন। তবে না খেতে থাকতে হচ্ছে তার। কোন ত্রাণও পাননি। তাই অনাহারে দিন কাটছে তাদের।
রাখাইনে আর ফিরে যাবেন কিনা- এমন প্রশ্নে আরবা বলেন, \’ভুলেও আর ওখানে যেতে চাই না। ওখানে আমাদের কোন নিরাপত্তা নেই। তাই বাংলাদেশে থাকতে যা করতে হয় তাই করবো।\’
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম