সকাল সোয়া ৮টা। বাসা থেকে বের হলেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন। কোথায় যাচ্ছেন, কি জন্য যাচ্ছেন- ড্রাইভার, দেহরক্ষী কেউ বলতে পারলেন না।জানা গেল, জেলা প্রশাসকের উদ্দেশ্য উপজেলাগুলোতে যেসব সরকারি কর্মকর্তা আছেন- তারা সঠিক সময়ে অফিসে আসেন কিনা, তা যাচাই করা। শহরের পোস্ট অফিস মোড় থেকে গাড়ি ঘুরালেন শৈলকুপার উদ্দেশ্যে।
ঘড়ির কাটায় যখন ৯টা বাজে, তখন শৈলকুপা উপজেলা পরিষদে হাজির তিনি। শুরু করলেন প্রতিটি দপ্তর পরিদর্শন। অফিস খোলা, কিন্তু অফিস প্রধান আসেননি। একে একে যুব উন্নয়ন, সমাজ সেবা, আনসার ভিডিপি, মৎস্য অধিদপ্তর, বিআরডিবি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি অফিস পরিদর্শন করলেন। অফিসে কাউকেই পেলেন না তিনি। অন্যান্য অফিসের কর্মকতারা এসেছেন, কিন্তু ওই দপ্তরগুলোর কর্তারা হয়তো তখনো ঘুমাচ্ছেন। পরিদর্শন শেষে সকল দপ্তরের জেলা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন অনুপস্থিত কর্মকর্তাদের শোকজ করা হয়। আকস্মিক পরিদর্শন শেষে জেলায় নিজ কার্যালয়ে ফিরলেন জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন।
এমন আকস্মিক পরিদর্শনে হতবাক উপজেলার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ। উপজেলার বাইরে থাকা একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেল এমন পরিদর্শনে খুবই খুশি তারা।
অনেকেই বললেন, জেলা প্রশাসকের এমন কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়। এতে উপজেলা তথা জেলার উন্নয়ন হবে আর ফাঁকিবাজ কর্মকর্তাদের কাজ করতে হবে। অনেকেই বললেন, এমন জেলা প্রশাসক যদি সকল জেলায় থাকতেন- তবে দেশটা আরও এগিয়ে যেত।
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন বলেন, জনগণের সেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু জেলার অনেক সরকারি দপ্তরের প্রধানরা সঠিক সময়ে অফিসে আসেন না এমন সংবাদে রবিবার শৈলকুপা পরিদর্শন করেছি। সেখানে গিয়ে এর সতত্যা পেয়েছি। আমার একটাই উদ্দেশ্য সরকারের সেবা জনগণকে সঠিকভাবে পৌঁছে দেয়া। জেলার কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী অফিস ফাঁকি দেবে এটা বরদাশত করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, সরকার সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। এজন্য জনগণকে সঠিকভাবে সেবা দিতে হবে। শৈলকুপার অনুপস্থিত আট জন কর্মকর্তার দেরিতে আসার কারণদর্শানোসহ তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নোটিশ দেয়ার জন্য জেলা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ধরনের অভিযান জেলার ছয় উপজেলায় অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, ০৫ নভেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস