করোনা ভাইরাস মহামারিকালে গত ২৩ জুলাই থেকে সর্বশেষ লকডাউনে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর ১১ আগস্ট থেকে শতভাগ যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল আবার শুরু হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কিছু শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে চালু হওয়া গণপরিবহনে কোনোভাবেই আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। এবং দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী বহন করা যাবে না। গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার বা কন্ডাক্টর, হেলপার-কাম ক্লিনার এবং টিকিট বিক্রয়কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
এছাড়া যানবাহনের মালিকদের যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি-সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু গণপরিবহনে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। এ নির্দেশনা বাসচালক, হেলপার ও যাত্রীরা কেউ পালন করছেন না। দেখে যেন মনে হয় স্বাস্থ্যবিধি মানার চেয়ে নিয়ম ভাঙার প্রতিযোগতায় সবাই ব্যস্ত।
দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে বাসগুলোতে। আবার অধিকাংশ যাত্রী মাস্ক পরলেও বেশির ভাগই মাস্ক ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি মানছেন না। তারা থুতনিতে রাখছেন মাস্ক, কেউ কেউ নাক বাদ দিয়ে শুধু মুখ ঢেকে রাখেছেন। যাত্রীদের একটি অংশ আবার মাস্কবিহীন চলাচল করছেন। অনেক জায়গায় দেখা যায়, বাসচালক মাস্ক ব্যবহার করলেও তার সহকারীর মাস্ক নেই। যাত্রীদের অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করলেও সেগুলো রেখেছেন শুধু থুতনিতে।
অপরদিকে রামপুরা ব্রিজ এলাকায় কথা হয় আকাশ সুপ্রভাত বাসের হেলপার জাহিদ আহমেদের সঙ্গে। মাস্ক কেন নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাস্ক পরাই ছিলাম। খুব গরম, তাই একটু খুলে রেখেছি। মালিবাগসংলগ্ন আবুল হোটেল এলাকার প্রধান সড়কে কথা হয় তুরাগ বাসচালক লাল মিয়ার সঙ্গে। তিনিও একই উত্তর দিলেন।
রাইদা পরিবহনের হেলপার শফিক মাস্ক ছাড়াই যাত্রীসেবায় নিয়োজিত। তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরা ভালো, তবে এতে অসুবিধাও আছে। আমার কথা যাত্রীরা শুনতে পায় না। তাছাড়া অনেক যাত্রীও মাস্ক পরছে না।’ মাস্ক ব্যবহারে অনীহা এমন যাত্রীর সংখ্যাও কম নয়। তাদের একজন জয়নাল আবেদিন। রাইদা পরিবহনযোগে কমলাপুরে যাবেন। তিনি বলেন, ‘এখন পরিবেশ ভালো দেখেই সরকার সব চালু করেছে। মাস্ক পরলে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়। তবে ওইটা পরতে পারলে ভালো।’
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আমরা রাজধানীর প্রতিটি বাস টার্মিনালে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটর করছি।’ তিনি আরো বলেন, বাসচালক বা হেলপারের পাশাপাশি যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। একই কথা বলছেন পরিবহনসংশ্লিষ্ট অন্য নেতারাও।
সংবাদ সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক