ছেলে ম্যাজিস্ট্রেট, তবুও রাস্তায় ভিক্ষা করছেন বাবা

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নচিকেতার বৃদ্ধাশ্রম গানটা সবারই জানা। ‘ছেলে আমার মস্ত মানুষ, মস্ত অফিসার মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার ওপার। নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি। ছেলের আমার আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম!’

এই গানটির গানের বিষয়বস্তু বুঝতেও শ্রোতার কোন অসুবিধা হয়না। বাস্তব জীবনে এমন উদাহরণ অনেক খুঁজে পাওয়া যায়। আর তার সর্বশেষ সংযুক্তি ময়মনসিংহের এক ভিক্ষুক। তার নাম মফিজ পাঠান (৬০)। তবে অবাক করার বিষয় হল যে, তার এক ছেলে জজ কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট। ভিক্ষুক বাবার ছেলেও ম্যাজিস্ট্রেট হয়? এই প্রশ্নটি সবার মনে উঁকি দিবেই। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস যদি এমন হয়, তখন তা মেনে নিতে হয়।

সারা জীবনের শ্রম ও কষ্ট সবই মনে হয় বিফলে চলে গেল। জীবনের শেষ সময়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে বাচাঁর স্বপ্ন দেখছেন বৃদ্ধা বাবা। ছেলে বড় অফিসার হলেও খোঁজ খবর রাখেন না বাবা-মায়ের। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজলার মুখী এলাকার বৃদ্ধ মফিজ পাঠানের বাস্তব জীবনের কথাই বলা হচ্ছে।

মফিজের এক ছেলে জজ কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট ও আরেকজন একটি প্রাইভেট কোম্পানির বড় অফিসার। দুই ছেলে থাকার পরেও বাবার জীবন চলছে ভিক্ষাবৃত্তি করে। ভিক্ষাবৃত্তি করা অবস্থায় এমন একটি ছবি ফেসবুকসহ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে এখন ভাইরাল হয়ে গেছে। সেই ছেলেদের ধিক্কার জানাচ্ছেন অনেকেই। আবার কমেন্টের মাধ্যমে খারাপ মন্তব্যও করেছেন অনেকেই।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর ) বিকালে ভালুকা উপজেলা সদর বাসস্ট্রান্ড এলাকায় ভিক্ষা করতে দেখা যায় মফিজ পাঠানকে। এ ছবিটি এখন যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। তিনি জানান, স্ত্রীকে নিয়ে ভালুকা উপজেলার খুরুয়ালী গ্রামে একটি ভাড়া বাসায় কোন মতে জীবন চলছে। ভিক্ষা করে যে টাকা পান, তাই দিয়ে চলে সংসার।

তিনি আরও জানান, তার সেই ম্যাজিস্ট্রেট ছেলে পরিবারের কোনো খোঁজ খবর নেন না। তিনি রাস্তায় রাস্তায় মানুষের কাছে হাত পেতে সংসার চালান। অসুখ হলে কোন ছেলেই খবর রাখে না। স্থানীয়রা জানান, ভিক্ষুক মফিজ অনেক দিন ধরেই ভিক্ষা করে আসছেন। এক ছেলে ম্যাজিস্ট্রেট ও অন্য ছেলে একটি কোম্পানির বড় অফিসার। তবুও তারা বাবা মায়ের খবর নেয় না। বর্তমান ওই বাবা-মায়ের করুণ অবস্থা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ২০ অক্টোবর    ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস পি