বৈশ্বিক মহামারি করোনার ফের বাড়তি গতির জন্য দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় নানা ভোগান্তির মধ্যে ঈদের ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে এখনও ঢাকা ফিরছে মানুষ।
আজ শনিবার (২২ মে) সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী ও আমিনবাজার ঘুরে বিভিন্ন পেশার মানুষকে ঢাকায় ঢুকতে দেখা গেছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় যাত্রীরা ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন যানবাহনে বাড়তি ভাড়া, অন্তহীন ভোগান্তি ও স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে রাজধানীতে আসছেন।
টাইলস মিস্ত্রি মো. সুমন। বোনের মৃত্যুতে রাজশাহীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। দাফন সম্পন্ন করে গ্রামের বাড়ি থেকে এসেছেন আমিনবাজার।
তিনি বলেন, আমার বোন মারা যাওয়ায় গ্রামের বাড়ি রাজশাহী গিয়েছিলাম। যাওয়ার পথে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি মাইক্রোবাস ভাড়া করে গিয়েছিলাম। কিন্তু আসার পথে ছোট ভাই আর খালাকে নিয়ে তিনি বিপদে পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী থেকে সাভারের আশুলিয়া পর্যন্ত মাইক্রোবাসের এসেছি। একেকজনের ভাড়া গুণতে হয়েছে ১২\’শ টাকা করে। মাইক্রোবাস চালক আমাদের আশুলিয়ায় নামিয়ে দিয়েছেন। সেখান থেকে বাসে ও পায়ে হেঁটে আমিনবাজার পর্যন্ত এসেছি। অসহনীয় গরমে হেঁটে আসতে গিয়ে আমার খালা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখন আমিনবাজার থেকে খালাকে নিয়ে যেতে হবে শ্যামলী।
মো. দুলাল মুরগির দোকানের কর্মচারী। ঈদের ছুটি শেষে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে রাজশাহী থেকে আমিন বাজারে এসেছেন।
তিনি বলেন, কখনও বাসে, কখনও ফেরিতে আবার কখনও পায়ে হেঁটে অনেক কষ্ট করে পরিবার নিয়ে রাজশাহী থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত এসেছি। ছুটি শেষে এত ভোগান্তি সহ্য করে কাজে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছি। এখন যাবো যাত্রাবাড়ী।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে আমিনবাজার এসেছে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মো. হারুন। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি কাটাতে বাড়ি গিয়েছিলাম। ছুটি শেষে লকডাউনের মধ্যে প্রায় সবকিছু খোলা। রুটি-রুজির জন্যই কষ্ট করে ঢাকায় এসেছি। বাড়িতে বসে থাকলে তো আর আমার কাজ কেউ করে দেবে না। আমার কাজ আমাকে করতে হবে।
ফরিদপুর থেকে আমিনবাজার এসেছেন বেসরকারি কর্মকর্তা আসলাম হোসেন।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে করে ফরিদপুর থেকে এসেছি আমিনবাজার পর্যন্ত। এখানে আসার পর মোটরসাইকেলের চাকা পাংচার হয়ে যায়। আমি যাবো কুমিল্লা।
তিনি বলেন, এ কেমন বিধি-নিষেধ। প্রায় সব কিছু খোলা রেখে শুধুমাত্র বন্ধ রাখা হয়েছে দূরপাল্লার বাহন। করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান বিধি-নিষেধে সাধারণ মানুষকে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।