কিছু কন্টেইনারে পণ্যের পরিবর্তে যাচ্ছে মানুষ!

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার লকডাউনের মধ্যে দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখলেও স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে যে যেভাবে পারছেন সবার গন্তব্য গ্রামের বাড়ি ছুটে চলছেন। মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে কন্টেইনার, বাস, মোটরসাইকেল, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা যে যেভাবে পারছেন ছুটে চলছেন।

রাজধানীসহ জেলা শহরগুলো থেকে যারা গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে তারা প্রতি বছর ঈদের শপিং, বন্ধুদের সাথে আড্ডা ঘুরতে যাওয়াসহ নানান পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে চলাচল করেন। কিন্তু এবার ঈদের কেনাকাটার আনন্দের মাঝে ভাটা ফেলেছে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের বিষয়টি। তাই তো কোনো উপায় না পেয়ে কেউ কেউ ছুটছেন কন্টেইনারে।

রাজধানীর একটি হোস্টেলে থাকতেন দিনাজপুরের এক শিক্ষার্থী। তিনি মা-বাবা, ভাই-বোনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে যাচ্ছেন। তিনি জানান, \”ঈদ মানেই আনন্দ আর ঈদের আনন্দ অবশ্যই আর সব আনন্দ থেকে আলাদা। এই আনন্দের সঙ্গে আর কোনো আনন্দের তুলনা চলে না। এই দিনটির জন্য সারা বছর প্রতীক্ষা করা হয়। ঈদ তো একটা পুনর্মিলনীর মতো। অনেক বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে এই দিনে দেখা হয়। তবে ঈদের আগে বাড়ি যাওয়া নিয়ে করোনাভাইরাসের কারণে সমস্যা হয়েছে। এরপরও বিকল্প উপায় হিসেবে কন্টেইনারে গ্রামে যাচ্ছি।\”

লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কন্টেইনারের সামনে বাবা, পেছনে মা, মাঝে ঘুমন্ত শিশুকে নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে অনেকে। অথবা ট্রাকের পেছনে ত্রিপলের ছাউনির নিচে গোটা পরিবার। এসব দৃশ্য সচরাচর চোখে পড়লেও এবার ভিন্ন চিত্রের দেখা মিলেছে। পণ্য পরিবহনের কন্টেইনারকে মানুষ বেছে নিয়েছেন।

কন্টেইনারের ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। তার মধ্যে নারী, পুরুষ, শিশুতে ঠাসা। প্রচন্ড রোদের মধ্যে ছোট্ট কনটেইনারে গরমে সবাই হাঁসফাঁস করছে। কন্টেইনারের পেছনের একটি দরজা খোলা। কোনো কারণে এটা কিছু সময় বন্ধ হলে অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়ার শঙ্কাও আছে। আবার কন্টেইনার খোলা রাখার কারণে সড়কে উচু নিচু জায়গায় ব্রেক কষার কারণে ছিটকে পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করতে এতটাই ঝুঁকি নিচ্ছে মানুষ ।

Scroll to Top