দিনদিন বেড়েই চলেছে বৈশ্বিক মহামারি করোনার তাণ্ডব। এ সংক্রমণ রোধ করতে বর্তমান সরকার কঠোর থেকে আরো কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে।
তবুও যেন থামছেই না মৃত্যুর মিছিল। দিনদিন রেকর্ড ভাঙছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা। এ কারণে ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচলে বিধি নিষেধ অর্থাৎ কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এ সময়ে জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি—বেসরকারি সব অফিস এবং গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তাই মানুষ বিভিন্ন স্থান থেকে নিজ নিজ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। আর এ সুযোগে পরিবহন শ্রমিকরা চার গুণ ভাড়া বেশি নিচ্ছেন। তাই কেউ কেউ বাধ্য হয়ে ট্রাকে, কেউ ছোট পিকআপভ্যানে আবার অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুরগি বহন করা খাঁচায় গন্তব্যে ছুটছেন।
সোমবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে সরেজমিনে এ চিত্রই দেখা যায়।
খন্দকার বেলায়েত হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনিসহ ৮/৯ জন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। করোনার কারণে সাত দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা দেওয়ায় তারা নিজ বাড়ি বগুড়ায় যাবেন। তাই তারা গাড়ির জন্য মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন বাসে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। আবার ভাড়াও চার গুণ বেশি। তাই তারা বাধ্য হয়ে সিরাজগঞ্জের একটি পিকআপভ্যানে (মুরগির বাচ্চা বহনকারী) জনপ্রতি ১২০ টাকা করে ঠিক করে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।
একই খাঁচায় থাকা আলামিন হোসেন জানান, অন্যান্য যানবাহনে ভাড়া চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি নেওয়া হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই অল্প টাকায় মুরগির বাচ্চা বহনকারী খাঁচার ভেতরেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছি।
এদিকে খাঁচার ভেতরে থাকা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার সময় দূর থেকে মহাসড়কে দায়িত্বে থাকা একজন ট্রাফিক পুলিশ দৌড়ে আসতে থাকেন গাড়ির দিকে। এসময় গাড়িচালক টের পেয়ে দ্রুত চলে যান। পরে ওই ট্রাফিক পুলিশ একটি অটোরিকশা নিয়ে গাড়িটির পিছু নিলেও আর থামাতে পারেনি।
অপরদিকে সকাল থেকেই গন্তব্যের পথে এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ভিড় করেছেন শতশত মানুষ। তবে যানবাহন সংকটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকেও নির্দিষ্ট গন্তব্যের যেতে পারছেন না অনেকেই।
এদিকে কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই। কোনো গাড়ি দাঁড়ালেই সেটিতে উঠতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন যাত্রীরা।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানাতে নিয়মিতই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আর কোনো যানবাহন অতিরিক্ত যাত্রী বহন করলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।