ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন মন্তব্য করে বলেছেন যে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন শেখ ফজলে নূর তাপস। তাঁর মতো রাঘব বোয়ালের মুখে চুনোপুঁটির গল্প মানায় না। ডিএসসিসি পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে গতকাল দুপুরে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গুলিস্তান এলাকার বিভিন্ন মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে সকাল ১১টার দিকে হাইকোর্টের কদম ফোয়ারার সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে সাঈদ খোকন বলেন, ‘তাপস মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করছেন।
তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তাঁর নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে তিনি কোটি কোটি টাকা লাভ করছেন। অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন-২০০৯, ২য় ভাগের ২য় অধ্যায়ের ৯(২)(জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।’
সাঈদ খোকন আরো বলেন, ‘মেয়রের দায়িত্ব ছাড়ার আগে আমি বলেছিলাম, যেকোনো প্রয়োজনে আমি জনগণের পাশে থাকব। আমি আমার কথা রেখেছি। আজ মেয়র তাপস যেসব ব্যবসায়ীর ফুলবাড়িয়া ও সুন্দরবন মার্কেট থেকে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করেছেন আমি তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছি। বিনা নোটিশে তাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। আজ যাঁরা সিটি করর্পোরেশনে, তাঁরা এই অসহায় মানুষের কান্না শুনতে পাচ্ছেন না।’ এ সময় সাবেক মেয়র ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পক্ষে ক্ষতিপূরণ দাবি এবং এ ঘটনার সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মানববন্ধনে উচ্ছেদ হওয়া দোকান মালিক আলাউদ্দিন দাবি করেন, ‘আমার দোকান বৈধ ছিল। কিন্তু বর্তমান মেয়র সেটা ভেঙে দিয়েছেন। ফলে মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছি। এ সময় তিনি বর্তমান মেয়র শেখ তাপসের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।’ মানববন্ধনে অন্য দোকান মালিকদের মধ্যে বক্তব্য দেন ওমর আলী, নাসিরুল্লাহ, অলিউল্লাহ প্রমুখ।
এদিকে ডিএসসিসি পরিচালিত উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন করতে আসা অনেকেই সাংবাদিকদের বলেছেন যে, তাঁরা টাকার বিনিময়ে এখানে এসেছেন। মূলত ঢাকায় তাঁদের কোনো দোকান নেই।
পুরান ঢাকার নবাবগঞ্জের বাসিন্দা নাজির বলেন, ‘এখানে আসছি কিছু সাহায্য পাওয়ার আশায়। এই মানববন্ধনের এক নেতা আমিসহ ৩০ জনরে নিয়া আসছে। বলছে কিছু টাকা দিব। আমার ছোড ছোড দুইডা বাচ্চা আছে। এখান থেকে কিছু সাহায্য দিবে বললো, তাই মানববন্ধন করতে আইছি।’
মানববন্ধনে ভাড়াটে লোক প্রসঙ্গে সাঈদ খোকনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। এটা বলে আমাকে দমানো যাবে না। তাঁকে (তাপস) এর জবাব দিতে হবে। এসব করে আমি যা বলেছি সেটা থেকে পাবলিক মাইন্ডকে সরানো যাবে না। এসব করে মিডিয়ার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানো যাবে না। আমি প্রকাশ্যে কথা বলেছি, গোপনে না। তিনি প্রকাশ্যে এসে কথা বলুন। মিডিয়া কন্ট্রোল করে আমাকে দমানো যাবে না। বরং আসেন বসেন বিতর্ক করেন।