সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুরের জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩০ লাখ টাকার হদিস মিলছে না। পরিষদের ব্যাংক হিসাব (সোনালী ব্যাংক, শাহজাদপুর শাখা, চলতি হিসাব নং ৪২১৩৫৩৩০০৮৯৫৫) থেকে যৌথ স্বাক্ষরে ১২৯টি চেকে ওই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব এসএম জিয়াউল করিম এবং অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে এনায়েতপুর থানায় মামলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, লোকাল গভর্ন্যান্স প্রজেক্টের (এলজিএসপি-৩) আওতায় জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদকে দুই অর্থবছরে (২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০) জন্য দুই কিস্তিতে প্রথম কিস্তিতে মোট ৩০ লাখ ১৫ হাজার ৮৪৪ টাকা থোক বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই হিসাবে এখন অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র আট টাকা।
সিরাজগঞ্জ এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের ডিএফ মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান ১৭ সেপ্টেম্বর পরিদর্শনের সময় ক্যাশবই যাচাই করে হিসাবে অসঙ্গতি দেখতে পেয়ে সোনালী ব্যাংক শাহজাদপুর শাখায় খোঁজ নেন। পরে ব্যাংক হিসাবে মাত্র আট টাকা পেয়ে তদন্ত করে বিষয়টির সত্যতা পায়। কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেন এবং থানায় মামলা করেন তিনি। এজাহারে সাক্ষী করা হয়েছে জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ, সোনালী ব্যাংক শাহজাদপুর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার এমদাদুল হাসান জুয়েল, ইউনিয়ন পরিষদের নতুন যোগদানকৃত সচিব শুভজিৎ রায় ও মহিলা ইউপি সদস্য সাহেলা বেগমকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হিসাবটি পরিচালিত হতো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও মহিলা ইউপি সদস্যের যৌথ স্বাক্ষরে। তাই ইউপি চেয়ারম্যান ও মহিলা ইউপি সদস্য-এর দায় এড়াতে পারেন না। সচিব জিয়াউল করিম সম্প্রতি চৌহালির স্থল ইউনিয়নে বদলি হয়েছেন এবং নতুন সচিব হিসেবে শুভজিৎ রায় যোগদান করেছেন।
এ বিষয়ে জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বলেন, আমার স্বাক্ষর জাল করে পরিষদের সাবেক সচিব টাকাগুলো তার নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেছেন।
জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব জিয়াউল করিম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা এবং উদ্যেশ্য প্রণোদিত। টাকা উঠানোর এখতিয়ার আমার নেই। আর তাদের স্বাক্ষর জাল করে টাকা উঠানোর বিষয়টি হাস্যকর।
সংশ্লিষ্ট সোনালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষর যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার পরই টাকা দেওয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, পরিষদের ব্যাংকে জমাকৃত ৩০ লাখ টাকার হদিস না থাকায় মামলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আনইগত ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাকিবুল হুদা বলেন, বিষয়টি দুদকের তালিকাভূক্ত হওয়ার কারণে পরবর্তী কার্যক্রম ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত পাবনা কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।