নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন তল্লা চামার বাড়ি বাইতুল সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে অনেকেই এটি বিস্ফোরণের ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করলেও মূলত তা গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান।
শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ইমাম ও মুয়াজ্জিন, ফটো সাংবাদিক, জেলা প্রশাসনের একজন কর্মচারীসহ প্রায় ৪৫ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে ৩৭ জনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিসের টিম। রাত পৌনে ১১টার দিকে আবদুল্লাহ আরেফিন গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা গেছে মসজিদের নিচ দিয়ে গ্যাসের একটি পাইপ রয়েছে। ওই পাইপের লিকেজ দিয়ে মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে যায়। এর মধ্যে এসি চলার কারণে মসজিদের ভেতরে সবগুলো জানালা ও দরজা বন্ধ ছিল। ফলে নির্গত গ্যাস বের হতে পারেনি।
তিনি বলেন, বিস্ফোরণের আগে কেউ হয়তো বাতি বা বিদ্যুতের কিছু জালানোর সময় স্পার্ক করে। সেই স্পার্ক থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে। সঙ্গে সঙ্গে সেটার কারণে এসি ও বাইরের ট্রান্সফরমারেও আগুন ধরতে পারে।
আবদুল্লাহ আরেফিন বলেন, আমরা এখানে এসে প্রথমেই ধারণা করি এসিগুলো বিস্ফোরণের সঙ্গে বৈদ্যুতিক কারণের সংশ্লিষ্টতা কম। পরে মেঝেতে থাকা পানিতে গ্যাসের বুদবুদ উঠায় সন্দেহ হয়। এরপর দেখা যায়, মসজিদের নিচে দিয়ে তিতাস গ্যাসের অনেকগুলো লাইন গেছে। লাইনের পাইপগুলোর প্রতিটিতে একাধিক লিকেজ রয়েছে। সেই লিকেজের গ্যাস সমসময় মসজিদে উঠত।
তিনি বলেন, নামাজের আগে থেকেই মসজিদ বন্ধ করে এসিগুলো চালু করার ফলে পুরো রুমেই এসি ও গ্যাস মিশে যায়। আর গ্যাসের ধর্মই হল বিস্ফোরণের অবস্থা তৈরি হলে বা কোনও আগুনের সংশ্লিষ্টতাা পেলে এরা বিস্ফোরিত হয় বা জ্বলে উঠে। সেই সূত্র মতেই এই ঘটনা ঘটে। সেই সঙ্গে এসিগুলো বিস্ফোরিত হয় কারণ এসিতেও গ্যাস রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধারণা করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা দ্রুত এখানে এসে আমাদের ধারণাকে নিশ্চিত করে। তারা জানান- গ্যাসের লাইন থেকেই এই বিস্ফোরণ হয়েছে।