আসন্ন উপনির্বাচনে নৌকার ৫ প্রার্থীই চূড়ান্ত, পাচ্ছেন না হাবীবুর রহমান মোল্লার ছেলে!

আসন্ন উপনির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ সমার্থকদের মনে ছিলো নানা জল্পনা কল্পনা। এবার সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জাতীয় সংসদের শূন্য হওয়া পাঁচটি আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের সংসদীয় বোর্ডের সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীব হাসান ঢাকা-১৮, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় সিরাজগঞ্জ-১, নওগাঁর রানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন হেলাল নওগাঁ-৬ এবং ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুজ্জামান বিশ্বাসকে পাবনা-৪ আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে।

সংসদীয় বোর্ডের একটি সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে। তবে ঢাকা-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত হলেও কাকে মনোনীত করা হয়েছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এর মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা পাবনা-৪ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হলেও অন্যদের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি। অন্য আসনগুলোতেও তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণার সম্ভাবনা বেশি।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গত রবিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মুহাম্মদ ফারুক খান।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা পাঁচটি আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। এলাকার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন নেতাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।’

দলের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘সংসদীয় বোর্ডের সভায় পাবনা-৪ আসনে মনোনয়ন ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আসনটিতে ইতিমধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য চারটি আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করার দায়িত্ব আওয়ামী লীগ সভাপতির ওপর ছেড়ে দিয়েছে সংসদীয় বোর্ড। এগুলোতে মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে।’

মনোনয়ন বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা ও অবস্থানকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৫৬ জন। মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত সংসদ সদস্য সাহারা খাতুনের ঘনিষ্ঠ ও মাঠে সক্রিয় নেতা হাবীব হাসান। তিনি বলেন, ‘মনোনয়নের বিষয়ে আমি এখনো নিশ্চিত নই। তবে সুযোগ পেলে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’

সিরাজগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয়। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা এখান থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আমি ২০০৮ সালের নির্বাচনে আসনটিতে সংসদ সদস্য হই। আবারও দল মনোনয়ন দিলে এলাকার মানুষের জন্য ধারাবাহিক কাজগুলো এগিয়ে নিতে পারব।’

নওগাঁ-৬ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত সংসদ সদস্য ইস্রাফিল আলমবিরোধী নেতা হিসেবে পরিচিত রানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন হেলাল। তিনি জোট সরকারের সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিগত জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও বিপুল ভোটে জয়ী হন। হেলাল বলেন, ‘মনোনয়নের বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। তবে দল আমার প্রতি আস্থা রাখলে প্রতিদান দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

পাবনা-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুজ্জামান বিশ্বাস। তিনবারের এই উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঈশ্বরদী অঞ্চলে মুজিব বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন।

সূত্রগুলো জানায়, ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবীবুর রহমান মোল্লার সন্তান মশিউর রহমান মোল্লা। আসনটিতে প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও তাঁর নাম গতকাল পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
:কালের কণ্ঠ

Scroll to Top