অর্থ, বিত্ত, আভিজাত্যের নেশায় এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী গডফাদারকেও নিজের কোলে তুলে নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। তাদের জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ পদবী দিয়ে পাশে পাশেই রেখেছেন। বিনিময়ে সেই চিহ্নিত অপরাধীরা মানিকগঞ্জ জেলাকে মাদকের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে, বানিয়েছে সন্ত্রাসের লীলাভূমি। এদিকে, অতিসম্প্রতি এমপি দুর্জয় তার নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও অন্যরকম বাণিজ্য ফেঁদে বসেছেন।
এ ঘটনায় প্রতারিত তিন শতাধিক নেতা কর্মী চরম ক্ষোভ, দুঃখ, অভিমানে তার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ কথাবার্তা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন। ঘিওর উপজেলার কালীগঙ্গা নদীর তরা বালুমহালটি দুর্জয় তার চাচাতো ভাই মাহবুবুর রহমান জনি’র নামে প্রায় এক কোটি টাকায় ইজারা প্রদানের ব্যবস্থা করেন। ইজারা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুর্জয় বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের তার বাসায় ডেকে বৈঠকে বসেন এবং তার বালু মহালের শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব দেন।
বালুমহালটিতে বিশাল লাভের লোভ দেখিয়ে নেতা কর্মীদের কাছে ৩০০টি শেয়ার বিক্রি করেন। প্রতিটি শেয়ার তিন লাখ টাকা হারে তিন দিনের মধ্যেই নয় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। ফলে এক কোটি টাকায় কেনা বালুমহালে পা ফেলার আগেই নয় কোটি টাকা আদায় করে দুর্জয় ও জনি বাণিজ্যিক সফলতায় খোশ মেজাজে রয়েছেন।
কিন্তু শেয়ার ক্রেতা নেতা কর্মীরা পড়েছেন মহাবিপাকে। তারা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পান, বালুমহালে প্রতিবছর বড়জোর তিন-চার কোটি টাকার বালু বিক্রি করা সম্ভব হয়। ফলে শেয়ার কেনা নেতারা পুঁজি থেকেই অন্তত পাঁচ কোটি টাকা খোয়াতে বসেছেন। এক বালু মহাল থেকেই দুর্জয়ের লাভ আট কোটি টাকা আর নেতা কর্মীদের লস পাঁচ কোটি টাকা! এ নিয়ে নেতা-কর্মীদর মধ্যে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
দুর্জয়কে অপসারণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন: অতিসম্প্রতি দুর্জয়ের নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নেত্রী মালিয়া জান্নাত প্রধানমন্ত্রীর কাছে নানা অপরাধে অভিযুক্ত নাঈমুর রহমান দুর্জয় এমপি’র অপসারণসহ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
তার লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন, সাংসদ দুর্জয় তার চাচা ভূমি দখলদার এবং চাঁদাবাজ তায়েবুর টিপু, এক সময়ের চেইন ছিনতাইকারী এবং সরকারের মাদকের তালিকাভূক্ত জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, সরকারের তালিকাভুক্ত মাদক সম্রাট একসময় সাপের বিষ বিক্রেতা কুখ্যাত সন্ত্রাসী যাকে র্যাব হন্য হয়ে খুঁজে বেরিয়েছে সেই আবুল বাসার, মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বহু চিহ্নিত হুন্ডি ব্যাবসায়ি বুগলি কানা ও পরিবহন শ্রমিক নেতা নামধারী শীর্ষ চাঁদাবাজ কানা বাবুল এর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
জেলায় সংঘবদ্ধ মাদক সিন্ডিকেট গড়েও এমপি দুর্জয় কোটি কোটি টাকা পকেটে পুরেছেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া অর্থ দিয়ে সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয় ব্যাংককে ফ্ল্যাট এবং মালয়েশিয়ায় বাড়ি নির্মাণ করেন। যার দেখাশোনা করেন সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের সহধর্মিনী এবং তার শ্যালক।