প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও ঈদ উপলক্ষে গ্রামে ফিরছেন রাজধানীর মানুষ। চেকপোস্টে তল্লাশি চালালেও কৌশলী এসব মানুষের বাড়ি ফেরা রোধ করা যাচ্ছে না। চেকপোস্টে নেমে পায়ে হেঁটেও বাড়ি ফিরছেন অনেকে। এতে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার (২১ মে) রাজধানী থেকে বের হওয়ার প্রধান কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা যায়, কেউ পায়ে হেঁটে পুলিশের চেকপোস্ট পার হচ্ছেন, আবার কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে করে। চেকপোস্টে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন তারা। আর এতে রাজধানী থেকে বের হওয়ার প্রধান সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে ঈদে কঠোরভাবে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছে পুলিশ। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় তা কার্যকর করা যাচ্ছে না।
গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার ভাড়া করে মানুষ গ্রামের দিকে ছুটছেন। এছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স, পিকআপ, ভ্যান ও ট্রাকেও ঢাকা ছাড়ছেন বহু মানুষ। এমনকি মোটরবাইকে করেও অনেকে দূর দূরান্তের জেলায় যাচ্ছেন।
গাবতলি, আব্দুল্লাহপুর, কাঁচপুর ও বাবু বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাজধানী থেকে প্রচুর যানবাহন বের হচ্ছে। চেকপোস্টে তল্লাশি থাকায় অনেকে বিকল্প পথেও ঢাকা ছাড়ছেন। যেমন রামপুরা থেকে ডেমরাগামী সড়কে সুলতানা কামাল সেতু পার হয়ে সহজেই রাজধানী থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এতে রামপুরা-ডেমরা সড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে।
চেকপোস্টে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন তারা। ছবি: ডিএইচ বাদলদিনের পাশাপাশি রাতেও অনেকে গাবতলি, বাবু বাজার সেতু ও কারওয়ান বাজার থেকে ট্রাক ও ভ্যানে করে নিম্ন আয়ের মানুষ গ্রামে যাচ্ছে। রাতে কারওয়ান বাজার থেকে ট্রাকে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছেন আবুল লেইছ। তিনি থাকেন রাজধানীর ভাটারা এলাকায়। লেইছ জানান, ট্রাকে করে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া যাওয়ার জন্য তাকে আটশ টাকা গুনতে হচ্ছে। ভাড়ায় চালিত বাইকে করেও অনেকে দূর দূরান্তের জেলায় যাচ্ছেন।
আব্দুল্লাহপুর থেকে বাইকে করে শেরপুর যাচ্ছেন আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমি এক হাজার টাকায় শেরপুর যাচ্ছি।’
এদিকে ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার ফের আগের মতোই সড়কে যানজট দেখা গেছে। যানবাহনে শারীরিক দূরত্বও মানা হচ্ছে না। এছাড়া ফুটপাত ও মার্কেটে মানুষের বেশ ভিড় দেখা গেছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখছে না কেউ।
আব্দুল্লাহপুরে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা চেকপোস্টে তল্লাশি বাড়িয়েছি। রাজধানী থেকে বের হতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।’