যারা প্রকৃত অসহায়, তারা তালিকায় আসুক: প্রধানমন্ত্রী

‘কারা দলের ভোটার এই দেখে তালিকা করা যাবে না বলে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা চাই, যারা প্রকৃত অসহায়, তারা তালিকায় আসুক। আওয়ামী লীগ শুধু দলীয় রাজনীতি করে না, আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য রাজনীতি করে।’

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিভাগের নয় জেলার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে, তার মানে এই না যে অমানবিক হতে হবে।

সকাল ১০টায় কনফারেন্স শুরু হয়। শুরুতে বক্তব্য দেওয়ার সময় করোনা সন্দেহে এক মাকে তাঁর সন্তানদের জঙ্গলে ফেলে আসার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। গত সোমবার টাঙ্গাইলের সখীপুরে মাকে ফেলে আসার ঘটনাটি ঘটে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাকে জঙ্গলে ফেলে আসার চেয়ে অমানবিক আর কিছু হতে পারে না। সন্দেহ হলে চিকিৎসা করান, নিজেরাও সুরক্ষা পান। একজন চিকিৎসককে এলাকা থেকে কেন বের করে দিতে হবে, যদিও তিনি আক্রান্ত নন। এসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।’

ঢাকা বিভাগের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, চিকিৎসক এ ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত আছেন।

এ জেলাগুলোতেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ৭০ ভাগ বলে সূচনা বক্তব্যে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজধানী ও আশপাশের জেলাগুলোতেই বেশি মানুষ আক্রান্ত। সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সহযোগিতা করা হবে, যা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ৫০ লাখ মানুষের রেশন কার্ড করা আছে, আরও ৫০ লাখের রেশন কার্ড করা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সারা বিশ্ব বলছে, অর্থনীতিতে বড় মন্দা দেখা দিতে পারে, যার ফলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এটি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে ৯২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী তিন বছরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জনসমাগম এড়িয়ে কাজ চালিয়ে নিতে হবে। মন্দা থেকে রক্ষা পেতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব সব নামাজ বন্ধ করে দিয়েছে, এমনকি তারাবিহ নামাজ ঘরে পড়বে তারা। এটি থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ঘরে বসে ইবাদত করতে হবে। তাই তারাবিহ নামাজ ঘরে পড়ার আহ্বান জানান তিনি। রমজানে পণ্য পরিবহন ও খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৮৬৮ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ১ হাজার ২৩১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বিশ্বের অবস্থা আরও ভয়াবহ। আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশে ৬১ হাজার নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই কিছু খবর আসে, যা দুঃখজনক। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আবার অনেক ক্ষেত্রে একজন আরেকজনকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে, যা কাম্য নয়। ত্রাণ যেন সঠিক লোকের হাতে পৌঁছায়, কোনো অনিয়ম যেন না হয়।’

দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে যতটা সুরক্ষিত করতে পেরেছি, প্রবাসে কিন্তু পারিনি। দেশের চেয়ে প্রবাসী বেশি মারা গেছেন।’

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতে কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশের সব জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী কাল ঢাকার আরও কিছু জেলার সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

Scroll to Top