বিশ্বজুড়ে এখন সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। এখনও পর্যন্ত সারাবিশ্বে ১৯ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়েছে কোভিড-১৯ মহামারীতে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হয়ে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় ১৯ হাজার মানুষ। এর মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন ১৯ জন। বাংলাদেশেই মারা গেছেন ৫ জন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ৮ জন, যুক্তরাজ্যে ৫ জন ও ইতালিতে ১ জন বাংলাদেশি মারা যান।
বাংলাদেশে ৫ জনের মৃত্য
গত ১৮ মার্চ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর দেয় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগ (আইইডিসিআর)। দেশের মাটিতে এটিই ছিল করোনায় প্রথম মৃত্যু।
এর পর ২১ মার্চ মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে আরেকজনের মৃত্যুর খবর জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
গত ২৩ মার্চ করোনা ভাইরাসে দেশে আরেকজনের মৃত্যু হয় বলে জানায় আইইডিসিআর। ওই দিন বিকেলে অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
মঙ্গলবার বিকেলে অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা চতুর্থ ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
সবশেষ বুধবার (২৫ মার্চ) আরেকজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে আইইডিসি। দুপুরে আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত নতুন কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি বলে জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ মার্চ দুজন নারী ও দুজন পুরুষ মারা গেছেন। এ নিয়ে নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে মোট ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু হলো। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৩ মার্চ ২ জন, তার আগের সপ্তাহে ২ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন।
এলমহার্স্ট হসপিটালে ৬০ বছরের আবদুল বাতেন, ৭০ বছরের নূরজাহান বেগম এবং ৪২ বছরের এক বাংলাদেশি প্রবাসী নারী মারা যান। প্লেইনভিউ হসপিটাল নর্থওয়েলে মারা গেছেন ৫৯ বছরের এটিএম সালাম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এছাড়াও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২০ মার্চ ইতালির মিলানে একজন এবং ২৩ মার্চ গাম্বিয়ায় এক বাংলাদেশি ইমাম মারা গেছে। তার আগের আগের সপ্তাহে মারা গেছেন মোতাহের হোসেন ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজন বাংলাদেশি।
যুক্তরাজ্য ৫ বাংলাদেশির মৃত্যু
লন্ডনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবশেষ মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সকালে খসরু মিয়া নামে এক বাংলাদেশি মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন।
এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে সর্বমোট ৫ জন বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার একই হাসপাতালে হাজি জমসেদ আলী (৮০) নামের আরেকজন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেন। হাজি জমসেদ আলীও পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত হোয়াইট চ্যাপেলের সেটেলস স্ট্রিট এলাকায় বসবাস করতেন।
যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন ম্যানচেস্টারে বসবাসরত ৬০ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি। তিনি পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে ইতালি থেকে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন ব্রিটেনে।
দ্বিতীয় বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসে। করোনাভাইরাসের সঙ্গে হাসপাতালে আটদিন যুদ্ধ করার পর পূর্ব লন্ডনের রয়েল লন্ডন হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন ৬৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি।
তৃতীয় বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন যুক্তরাজ্যে সফররত এক বাংলাদেশি। লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ইতালিতে ১ বাংলাদেশির মৃত্যু
এছাড়া ইতালির মিলানে গত ২০ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এক বাংলাদেশি। পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তার বয়স ৫০ হলেও ঘনিষ্ঠজনেরা জানান, প্রায় ৬০ বছর বয়সী ছিলেন ওই ব্যক্তি।