শীত আসতে শুরু করলেও দাম চড়া সবজির!

প্রকৃতির শীত রান্নাঘরেও একধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসে। স্বাদ পাল্টাতে খাবারের তালিকার বড় একটা অংশ দখল করে রাখে শীতকালীন সবজি। তবে চলতি মৌসুমে সবজির বাজারদর সে তালিকা যেন অনেকটাই আঁটসাঁট করে ফেলেছে।

কয়েক কিলোমিটার ব্যবধানের দুই বাজারের মধ্যেও সবজির দামের তারতম্য আছে। পেঁয়াজের আকাশচুম্বী দাম আগে থেকেই ছিল। সঙ্গে যোগ হয়েছে ফুলকপি, মুলা, লাউ, বেগুন ও পটোলের দাম। এসব সবজির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ৮০ টাকা। তবে আশার খবর হলো, প্রায় সপ্তাহজুড়ে নাভিশ্বাস তোলা পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে।

বাজারে এসব পণ্যের দাম মেটাতে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে প্রায়ই বাগ্বিতণ্ডা হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় মৌসুমের শুরুতেই সবজির দাম বেড়েছে। অন্যদিকে দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে না পেরে চাহিদার থেকেও কম পণ্য কিনে বাড়ি ফিরছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা।

গতকাল সোমবার ভোর ছয়টা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত নাটোরের পাঁচটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের শুরুতে যে পরিমাণ শাকসবজির ওঠার কথা, তা নেই। দেশের কোথাও কোথাও নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলেও গতকাল নাটোরের বাজারে নতুন পেঁয়াজের দেখা মেলেনি।

সকাল সাতটায় নাটোর রেলস্টেশন কাঁচাবাজার আড়তে গিয়ে দেখা যায়, মানভেদে দেশি পুরোনো পেঁয়াজ ১৭০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। ঝাঁজ মেটাতে অনেক ক্রেতা পেঁয়াজের পাতার দিকে ঝুঁকলেও প্রতি কেজি পাতা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা।

রেলস্টেশন কাঁচাবাজারের আড়তদার মেজবা ঊন নবী জানান, নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলার হালতি বিল এলাকায় পেঁয়াজের চাষ বেশি হয়। কিন্তু এ বছর কয়েক দফায় বৃষ্টি হওয়ার কারণে চাষিরা পেঁয়াজ আবাদ করেছেন দেরিতে। তাই বাজারে এখনো নতুন পেঁয়াজ আসেনি। তবে দুই থেকে চার দিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠতে পারে বলেও জানান তিনি।

শীতকালীন অন্যান্য সবজির মধ্যে নাটোরের বাজারে নতুন আলু এসেছে। তবে দাম অস্বাভাবিক। পুরোনো আলু প্রতি কেজি ২০ থেকে ২১ টাকা দরে বিক্রি হলেও প্রতি কেজি নতুন আলু (লাল) পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে। আর সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। মুলার দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা। ফুলকপির দাম কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা আর শসা বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়।

স্টেশন কাঁচাবাজার থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরের নিচাবাজারে প্রতিটি সবজি কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারের সবচেয়ে বড় সবজি দোকানি পচু মিয়া জানান, স্টেশন বাজারে পাইকারি বিক্রি হয়। নিচাবাজারে খুচরা বিক্রি হওয়ায় দামও কিছুটা বেশি।

নাটোরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড কাঁচাবাজার, দত্তপাড়া বাজার ও তেবাড়িয়া কাঁচাবাজার ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। অন্যদিকে জেলার সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের বাজার নলডাঙ্গা হাটে পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়।

তবে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শামশুল ইসলাম বলেন, সবজির চড়া দাম নিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। অতিরিক্ত দামের বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
:প্রথম আলো